খন্দপথে অটোর ঘাড়ে বেসামাল ভ্যান, তা ঘিরে তাণ্ডবের সচিত্র সংবাদ খবরের কাগজে দেখে রাতারাতি রাস্তায় প্রলেপ পড়েছিল। কিন্তু মাস ঘুরতে না ঘুরতে আবার একই জায়গা গর্তে ভরেছে। ভাঙা রাস্তায় উল্টেছে টোটো। আছাড় খেয়েছে মোটরবাইক।
ব্যারাকপুরের ঘোষপাড়া রোডে লালকুঠির কাছে রাস্তা বেশির ভাগ সময়েই থাকে এমন বেহাল অবস্থায়। একটু বৃষ্টিতেই জল জমে যায়। মোটরবাইক, অটো বা টোটোর যাত্রীরা রীতিমতো আতঙ্কে পেরোন পথের ওই অংশটুকু। বড় গাড়ি গেলে জল ছিটকে এসে লাগে যাত্রীদের গায়ে। শনিবার থেকে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে লালকুঠিতে রাস্তার চেহারাই বদলে গিয়েছে। রবিবার একটি টোটো উল্টে জখম হয়েছেন চার জন। সন্ধ্যায় অটো ও স্কুটারের ধাক্কায় জখম হয়েছেন দু’জন। আগরপাড়ার বাসিন্দা, পেশায় চিকিৎসক অনিন্দিতা রায় স্কুটার নিয়ে উল্টে পড়েন লালকুঠির রাস্তায়।
কিন্তু সারানোর পরেও কেন এত গর্ত, প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দারা। লালকুঠি মোড়টি ভৌগোলিক ভাবে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চৌমাথা। কাঁচরাপাড়া-নৈহাটি বা বারাসত-বরাহনগর, যে দিক থেকেই শিল্পাঞ্চলের যে প্রান্তে যাওয়া হোক, এই চৌমাথাটি পেরোতে হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, লালকুঠিতে ব্যারাকপুর উড়ালপুল তৈরি হওয়ার আগে রেলগেট থাকাকালীনও রাস্তার এই অংশ খানাখন্দেই ভরা থাকত। উড়ালপুল হওয়ার পরে গাড়ির চাপ অনেক বেড়েছে। কিন্তু রাস্তার হাল ফেরেনি। ব্যারাকপুরের পুর প্রশাসন সূত্রে খবর, এই রাস্তার তলা দিয়েই টেলিফোনের তার, জলের লাইন, বিদ্যুতের লাইন গিয়েছে। ফলে কোনও সমস্যা হলেই এখানে খোঁড়াখুঁড়ি করে সংশ্লিষ্ট দফতর। পরে ফেলে রেখে চলে যায়। প্রশাসন চাপ দিলে প্রলেপ পড়ে, নইলে তা-ও নয়। ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাস বলেন, ‘‘পূর্ত দফতরের রাস্তা। কিন্তু এত দফতরের লাইন ওই রাস্তার নীচে যে সারানো হতে না হতেই আবার খোঁড়া হয়। দুর্ঘটনা ঘটে।’’
এ দিকে রাস্তার হাল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ মহকুমাশাসক। মাস কয়েক আগেই ঘোষপাড়া রোডের ওই অংশে দুর্ঘটনার পরে গর্ত বোজাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। ফের একই অবস্থা হওয়ায় ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পীযূষ গোস্বামী বলেন, ‘‘পূর্ত দফতরকে বলেছি অবিলম্বে গর্ত বোজাতে। কারা রাস্তা খুঁড়েছিল, সেই দফতরের প্রতিনিধিকে ডেকে পাঠাতে বলেছি। এ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা খুঁড়লে তা ঠিকমতো সারাতেও হবে।’’