কয়েক মাস আগেই জ্বর-ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়িয়েছিল হাবড়া শহরে। ৬ জনের মৃত্যু হয়। আক্রান্ত হয়েছিলেন বহু মানুষ। আতঙ্কের সেই স্মৃতি এখনও তাড়া করছে হাবড়াবাসীকে। এর মধ্যে ফের ডেঙ্গির আশঙ্কা উঁকি দিচ্ছে শহর এলাকায়।
হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের দুই যুবকের রক্তে এনএস-১ মিলেছে। হাসপাতাল সুপার শঙ্করলাল ঘোষ বলেন, ‘‘ওই দুই যুবকের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলল কিনা, তা সোমবার রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট পেলে জানা যাবে।’’
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, রক্তে এনএস-১ পজিটিভ মানেই ডেঙ্গি আক্রান্ত নয়। যে কোনও ধরনের মশাবাহিত রোগ হতে পারে। তবে হাবড়ার ক্ষেত্রে ওই দুই যুবকের ডেঙ্গি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। চিকিৎসকদের কথায়, ‘‘যেহেতু হাবড়া এলাকায় কয়েক মাস আগেই ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়িয়েছিল, ফলে ওই দুই যুবকের শরীরের ডেঙ্গির জীবাণু মেলার আশঙ্কা রয়েছে।’’
হাসপাতাল ও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, যে দু’জনের রক্তে এনএস-১ পজিটিভ মিলেছে, তাঁদের একজন সম্রাট দাস। বাড়ি উত্তর হাবড়ায়। অন্যজন শান্তনু আচার্য, থাকেন শ্রীনগর এলাকায়। কয়েক মাস আগে ওই সব এলাকাতেও জ্বর-ডেঙ্গি ছড়িয়েছিল। সম্রাটের বাবা মিলন দাস বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে ছেলে মুম্বইয়ের হোটেলে কাজ করতে গিয়েছিল। সেখানে জ্বরে পড়ে। ওষুধ খেয়ে সুস্থও হয়ে ওঠে। সপ্তাহখানেক আগে বাড়ি ফিরে ফের জ্বরে পড়েছে।’’
বৃহস্পতিবার হাসপাতাল সূত্রে খবর পেয়ে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের একটি দল ওই দুই যুবকের বাড়িতে যায়। পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘সম্রাট মুম্বইয়ে কাজ করতেন। শান্তনু ব্যারাকপুরে র্যাফে কর্মরত। সেখান থেকে তাঁরা জ্বর নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন দিন কয়েক আগে।’’
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’জনে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। বৃহস্পতিবার তাঁদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাঁদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘ওঁদের বলে দেওয়া হয়েছে সাবধানে থাকতে। কী শারীরিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে কী করতে হবে, তা-ও বলা হয়েছে। নিয়মিত প্লেটলেট কাউন্টও পরীক্ষা করাতে বলা হয়েছে।’’ পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, ২৪টি ওয়ার্ডে নিয়মিত মশা মারার স্প্রে করা হচ্ছে। ব্লিচিং ছড়ানো হচ্ছে। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে বোঝাচ্ছেন। ১২০টি দল তৈরি করা হয়েছে এ জন্য।’’