দুর্যোগে মাথা গোঁজার ঠাঁই হাসনাবাদে

বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি হল হাসনাবাদের ভবানীপুরে। প্রায় এক একর জমির উপরে তৈরি করা তিনতলা ভবনটি প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল প্রকল্পের কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়েছে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

হাসনাবাদ শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৩০
Share:

নির্মাণ: এখানেই প্রয়োজনে আশ্রয় পাবেন অনেকে। —নিজস্ব চিত্র।

বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি হল হাসনাবাদের ভবানীপুরে। প্রায় এক একর জমির উপরে তৈরি করা তিনতলা ভবনটি প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল প্রকল্পের কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়েছে।

Advertisement

গত কয়েক বছর আগের কথা, বিধ্বংসী আয়লায় লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল সুন্দরবন-লাগোয়া হাসনাবাদের ভবানীপুর এলাকা। ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল সুন্দরবন-লাগোয়া আরও বহু গ্রাম। বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ঝড়ের প্রকোপে সুন্দরবন এলাকায় অনেক নদীর বাঁধ ভেঙে গ্রাম প্লাবিত হওয়ার ফলে বহু মানুষ নিরাশ্রয় হয়ে পড়েছিলেন। কেউ স্থানীয় স্কুলবাড়ি, কেউ ক্লাবঘরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। যে কারণে দিনের পর দিন স্কুল বন্ধ ছিল আয়লার পরে। সে কথা মাথায় রেখে নদীমাতৃক এই এলাকায় বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় ভবনটি তৈরি হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।

ভবনের দোতলা ও তিনতলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়া গৃহহীনদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গবাদি পশু রাখার জন্য পরিকাঠামো গড়া হয়েছে একতলায়। প্রতিবন্ধীদের জন্য রয়েছে র‍্যাম্পের উপর দিয়ে ঘরে ঢোকার ব্যবস্থা। ভবনের ১০টি ঘরের প্রতিটিতেই রয়েছে আলো, পাখা, পানীয় জল এবং শৌচাগারের ব্যবস্থা। বহুমুখী কাজে ওই ভবনটি ব্যবহারের জন্য বেশ কয়েকটি ঘরের দেওয়ালে তৈরি হয়েছে বড় বড় ব্ল্যাক বোর্ড। প্রয়োজনে সেখানে বিভিন্ন সময়ে নিরক্ষরতা দূরীকরণ, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মহিলাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ছাড়াও নানা সামাজিক কাজের জন্য ব্যবহার করার সুবিধা রাখা হয়েছে।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা বিধান কাহার, সিরাজুল শেখ বলেন, ‘‘আয়লার তাণ্ডবে সর্বস্ব হারিয়ে গ্রাম ছাড়তে হয়েছিল। এক কাপড়ে পরিবার নিয়ে এর-ওর বাড়ি, ক্লাব, স্কুলঘরে কাটাতে হয়েছিল।

ভবিষ্যতে ফের কখনও আয়লার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে গ্রাম প্লাবিত হলে আর গ্রামের মানুষকে অন্যত্র যেতে হবে না। বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা যাবে।’’

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা তথা জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ ফিরোজ কামাল গাজি বলেন, ‘‘বিদ্যাধরী নদী এলাকা-লাগোয়া ভবানীপুর গ্রামে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে এখানে আশ্রয়ের পাশাপাশি রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড, জমির দলিল-সহ গ্রামবাসীদের জরুরি কাগজপত্র সংরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভয়াবহ কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগে এলাকার মানুষ এখানে ঠাঁই নিতে পারবেন। এ ছাড়াও, বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজের জন্য এই ভবন ব্যবহার করা যেতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন