জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে। অথচ, এ সংক্রান্ত তেমন কোনও তথ্যই নেই ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের কাছে!
বুধবার ভাঙড়ে জ্বর নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে খোদ জেলাশাসক (ডিএম) ওয়াই রত্নাকরই চমকে গিয়েছেন এ সংক্রান্ত তথ্য চেয়েও না-পেয়ে। তিনি উষ্মাও প্রকাশ করেন বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। তার পরেই তিনি আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জ্বরের রোগীদের সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করার নির্দেশ দেন। পঞ্চায়েত প্রধানদের বলা হয় এলাকার নর্দমা, জমা জল এবং আবর্জনা পরিষ্কার করার জন্য। যা শুনে বিরোধীরা বলছেন, দেরিতে ঘুম ভাঙল প্রশাসনের।
ভাঙড়ে বহু বাড়িতেই কেউ না কেউ জ্বরে আক্রান্ত। ইতিমধ্যে ডেঙ্গিতে বেশ কয়েক জনের মৃত্যুও হয়েছে বলে দাবি সাধারণ মানুষ এবং বিরোধী দলগুলির। তবে, জেলা প্রশাসন সেই দাবি মানেনি। এ দিন বৈঠকের পরে জেলাশাসক বলেন, ‘‘ভাঙড়ে কেউ ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন, এমন খবর নেই। ডেঙ্গি মোকাবিলায় সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কারও যদি নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ থাকে, তা হলে তাঁরা আমাদের জানাতে পারেন।’’
ভাঙড়-২ ব্লক অফিসে ওই বৈঠকে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সোমনাথ মুখোপাধ্যায়, মহকুমাশাসক (বারুইপুর) শ্যামা পরভিন, বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ, বিভিন্ন পঞ্চায়েতের প্রধান এবং নানা দফতরের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। জ্বর-ডেঙ্গি মোকাবিলায় বিভিন্ন দফতরের কাজ নিয়ে জেলাশাসক ক্ষোভও প্রকাশ করেন। আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সহযোগিতার নির্দেশ দেন পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যদের। বিভিন্ন স্কুল চত্বরের ১০০ মিটারের মধ্যে এলাকা পরিষ্কারের কথাও বলা হয়।
প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ভাঙড়ের বিভিন্ন এলাকার জমা জলে ইতিমধ্যে ডেঙ্গির মশার লার্ভা, পিউপা পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে। নিকাশি ব্যবস্থা এবং পুকুর সংস্কার ঠিকমতো না হওয়া, আবর্জনা জমে থাকা সংক্রান্ত রিপোর্টও মিলেছে। মশার লার্ভা মারার জন্য ঠিকমতো রাসায়নিক ছড়ানো হচ্ছে না বলে অভিযোগ। এ সব নিয়ে মানুষকে সচেতন করার কথাও বলা হয় ওই বৈঠকে। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) আজ, বৃহস্পতিবার থেকে রবিবার পর্যন্ত ভোগালি-১, ২, পোলেরহাট-১, ২, শানপুকুর এবং চালতাবেড়িয়া পঞ্চায়েত এলাকায় স্বাস্থ্য শিবির করবে।