যানজট: চলছে অবরোধ। নিজস্ব চিত্র
গ্রামে জলের নলকূপ একটি। তা দিয়ে চাহিদা মেটে না। বাধ্য হয়ে জল আনতে যেতে হয় প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে পাশের গ্রামে। একাধিকবার প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ ডায়মন্ড হারবারের মোহনপুরের বাসিন্দাদের।
এ বার আন্দোলনের পথ বেছে নিলেন গ্রামের মানুষ। মঙ্গলবার ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসী। সকাল ৮টা থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।
ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক শান্তনু বসু বলেন, ‘‘ওই গ্রামের নলকূপগুলির কী অবস্থা, তা খতিয়ে দেখার জন্য জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের বাস্তুকারকে বলা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়মন্ড হারবার ১ ব্লকে হরিণডাঙা পঞ্চায়েতের অধীনে ওই মোহনপুর গ্রাম। প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষের বাস ওই গ্রামে। ডায়মন্ড হারবার শহর-লাগোয়া গ্রামটিতে এখনও পাইপ লাইনে জল সরবরাহ শুরু হয়নি। সারা গ্রামে পাঁচটি নলকূপ আছে। কিন্তু জল আসে মাত্র একটিতে। বাকিগুলি অকেজো। গরমের জন্য গ্রামের পুকুরগুলিও তলানিতে ঠেকেছে। পানীয় জলের আকাল, তার উপরে সংসারের কাজের জলও মিলছে না। এতে গ্রামের মানুষের সমস্যা বেড়েছে।
সামসুন্না বিবি, তাহেরা বিবিরা বলেন, ‘‘বাধ্য হয়ে পুকুরের জলই খেতে হয়েছিল। কিন্তু তাতে পেটের অসুখ দেখা দিয়েছে। পুকুরের জলে স্নান করে চামড়ায় র্যাশ বেরোচ্ছে।’’ ফলে গ্রামের মানুষকে পাশের গ্রাম পারুলিয়া, বসন্তপুর, কামারপোল, বুনোরহাট থেকে জল আনতে হচ্ছে। কিন্তু এ ভাবে আর কত দিন চলবে, প্রশ্ন গ্রামবাসীদের। পাশের গ্রাম থেকে জল নেওয়া হয় বলে ওই গ্রামের লোকেদের থেকে গালিগালাজও শুনতে হয় বলে জানালেন বাসিন্দারা।
এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ তাঁরা মোহনপুর মোড়ে কাঠের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ শুরু করেন। খালি বালতি, কলসি ডাবর নিয়ে বহু মহিলা ওই আন্দোলনে সামিল হন। এ দিকে জাতীয় সড়কের অবরোধ হওয়ায় ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা ও কলকাতাগামী বহু গাড়ি আটকে পড়ে। গরমের মধ্যে চরম ভোগান্তি হয় হাজার হাজার যাত্রীর।