ড্রোনের ছায়ায় নজরদারি এ বার সুন্দরবনের জঙ্গলে

দক্ষিণে বিস্তৃত বঙ্গোপসাগর, পূর্বে জলরেখায় সীমানা টেনেছে বাংলাদেশ। তারই মাঝে ছোট-মাঝারি অজস্র দ্বীপ— সুন্দরবনের এই ভৌগলিক অবস্থানে নজরদারি চালাতে সেই জল-জঙ্গলের উপরে এ বার ড্রোনের ছায়া পড়তে চলেছে। নদী-খাঁড়ি বরাবর বন দফতর কিংবা সীমান্ত ও উপকূলরক্ষী বাহিনীর টহলদারিতেই এ যাবৎ ভরসা রেখেছিল সুন্দরবন।

Advertisement

সামসুল হুদা

গোসাবা শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৫ ০১:১৬
Share:

নজরদারি চালাবে এই ড্রোন। —ফাইল চিত্র।

দক্ষিণে বিস্তৃত বঙ্গোপসাগর, পূর্বে জলরেখায় সীমানা টেনেছে বাংলাদেশ। তারই মাঝে ছোট-মাঝারি অজস্র দ্বীপ— সুন্দরবনের এই ভৌগলিক অবস্থানে নজরদারি চালাতে সেই জল-জঙ্গলের উপরে এ বার ড্রোনের ছায়া পড়তে চলেছে।

Advertisement

নদী-খাঁড়ি বরাবর বন দফতর কিংবা সীমান্ত ও উপকূলরক্ষী বাহিনীর টহলদারিতেই এ যাবৎ ভরসা রেখেছিল সুন্দরবন।

কিন্তু নদী-নালার জলবিভাজিকায় প্রায় বিচ্ছিন্ন ওই সব দ্বীপের গভীরে যাওয়া প্রায় দুষ্কর। তাই চোরাশিকারের সম্ভাবনা রুখতে ড্রোন ব্যবহার করতে চাইছে বন দফতর।

Advertisement

বন দফতর সূত্রের খবর কিছু দিন আগে বন দফতরের বোর্ড সদস্যদের বৈঠকে নজরদারির স্বার্থে সুন্দরবনে ড্রোনের নজরদারির দাবি জানানো হয়েছিল। প্রস্তাব পছন্দ হয়েছিল খোদ মুখ্যমন্ত্রীরও। তাঁর সম্মতি পেয়েই নড়চড়ে বসেছিলেন বনকর্তারা। তবে কতগুলি ড্রোন কেনা হবে সে ব্যাপারে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে এক শীর্ষ বনকর্তা জানিয়েছেন।

বন দফতর সূত্রে খবর, ড্রোন কেনার জন্য ইতিমধ্যেই ই-টেন্ডার ডেকে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু কোনও সংস্থার কাছেই তেমন সাড়া মেলেনি। এ বার তাই সে দায়িত্ব বর্তেছে ওয়েবেলের উপরে।

সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডাইরেক্টর সৌমিত্র দাশগুপ্ত বলছেন, ‘‘ড্রোন কেনার জন্য আমরা ২৫ লাখ টাকা ওয়েবেলকে দিয়েছি। তারা খোঁজ খবর নিয়েই ড্রোন কেনার তোড়জোড় শুরু করেছেন বলেও শুনেছি।’’ সৌমিত্রবাবুর আশা, ড্রোন ব্যবহারের ফলে সুন্দরবনের প্রায় অগম্য খাঁড়ি এবং বনের বিভিন্ন কম্পার্টমেন্ট এলাকায় নজরদারির সুবিধা হবে। এর ফলে জঙ্গলের ভিতরের ছবি তুলে আনা যাবে বলে মনে করছেন তিনি। যা সুন্দরবনে বেড়াতে আসা পর্যটকদের বাড়তি পাওনা হবে বলে মনে করছেন বনরর্তারা।

শুধু বনের নিরাপত্তাই নয়, সুন্দরবনে জলদস্যুদের হানাও ক্রমেই বেড়ে চলেছে। মৎস্যজীবীদের উপরে আক্রমণ এবং অপহরণের ঘটনাও বেড়ে চলেছে। বাদ যাচ্ছে না সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে যাওয়া মউলেরাও। দুর্বল নজরদারির অভাবে আন্তর্জাতিক জলসীমা পেরিয়ে চলছে চোরাচালান এবং অনুপ্রবেশ।

পশ্চিমবঙ্গে সুন্দরবনের আয়তন ৪২৬৫ বর্গকিলোমিটার। যার মধ্যে ব্যাঘ্র প্রকল্প দফতরের অধীন ১৬৮০ বর্গকিলোমিটার এলাকা। জঙ্গল রক্ষার জন্য রয়েছে ২৯টি ক্যাম্প অফিস। আর কিছু জলযান। যা প্রয়োজনের তুলনায় নেহাতই স্বল্প। সেই ঘাটতি মেটাতেই ড্রোনের ভরসায় এ বার বুক বাঁধছে বন দফতর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন