Corruption

প্রাইমারি ১০ লাখ, উচ্চ মাধ্যমিক ১৪ লাখ, বাগদায় ৯৫% চাকরির পিছনে চন্দন! দাবি দুলালের

‘নিয়োগ দুর্নীতি’তে রঞ্জন আপাদমস্তক জড়িত বলে বছর দুয়েক আগেই দাবি করেছিলেন সিবিআইয়ের প্রাক্তন কর্তা উপেন বিশ্বাস। তখন অবশ্য বিষয়টি নিয়ে ততটা শোরগোল হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাগদা শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২৩:১৪
Share:

চন্দন মণ্ডল (বাঁ দিকে) ও তাঁর বাড়ি। ফাইল ছবি।

উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায় স্কুলে চাকরির অধিকাংশই হয়েছে চন্দন মণ্ডল ওরফে রঞ্জনের হাত ধরে। শুক্রবার চন্দন গ্রেফতার হওয়ার পর এমনটাই দাবি করলেন বাগদার প্রাক্তন বিধায়ক দুলাল বর। ‘নিয়োগ দুর্নীতি’তে রঞ্জন আপাদমস্তক জড়িত বলে বছর দুয়েক আগেই দাবি করেছিলেন সিবিআইয়ের প্রাক্তন কর্তা উপেন বিশ্বাস। তখন অবশ্য বিষয়টি নিয়ে ততটা শোরগোল হয়নি। কিন্তু গত বছর সিবিআই শিক্ষক নিয়োগে ‘দুর্নীতি’র তদন্তে নামার পর আবার ভেসে ওঠে রঞ্জনের নাম। ঘটনাচক্রে, সেই সময়েও সরব হতে দেখা যায়নি জেলার রাজনীতিতে ‘উপেন-বিরোধী’ বলেই পরিচিত দুলালকে। তিনি এত দিন পর কেন বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

Advertisement

শনিবার দুলাল দাবি করেন, ২০১২ সাল থেকেই চাকরি বিক্রির খেলায় জড়িত চন্দন। বাগদায় ৯৫ শতাংশ চাকরি তাঁর মাধ্যমে হয়েছে। স্কুলে প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিকে-উচ্চ মাধ্যমিক স্তর, এমনকি তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরির জন্যেও চন্দন কত টাকা নিতেন, তা-ও খোলসা করেন বিজেপি নেতা। বলেন, ‘‘প্রাথমিকে ১০ লাখ, উচ্চ প্রাথমিকে ১২ লাখ, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ১৪ লাখ টাকার বিনিময়ে চাকরি দিতেন রঞ্জন। যাঁরা চাকরির জন্য টাকা দিয়েছেন, তাঁদের বলব, বাড়িতে চড়াও হয়ে কলার ধরে টাকা আদায় করুন।’’

চন্দন গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁর ঘনিষ্ঠমহলের দাবি, উপেন ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণের চন্দনকে ফাঁসিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে দুলাল বলেন, ‘‘কোথায় নেতাজি আর কোথায় পেঁয়াজি! উপেন বিশ্বাস প্রাক্তন মন্ত্রী এবং সিবিআইয়ের যুগ্ম ডিরেক্টর ছিলেন। আর চন্দন এক জন প্যারা টিচার।’’ প্রসঙ্গত, উপেন যখন প্রথম বার টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন, তখন তিনি কারও নাম নেননি। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন, তাঁকে উল্লেখ করতেন ‘সৎ রঞ্জন’। উপেনের দাবি, ‘সৎ’ কারণ, চাকরি দিতে না পারলেন টাকা ফেরত দেন রঞ্জন! পরে কলকাতা হাই কোর্টের সৌজন্যে জানা যায়, রঞ্জন আসল নাম চন্দন মণ্ডল। তার পরেও অভিযোগ ওঠে, তাঁকে প্রাথমিক ভাবে খুঁজে পায়নি সিবিআই। পরে অবশ্য চন্দন আত্মপ্রকাশ করেন এবং সিবিআইয়ের ডাকে বেশ কয়েক বার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজির হন।

Advertisement

কিন্তু দুলাল এত দিন পর উপেনের সুরে সুর মেলানোয় বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ, জেলার রাজনীতিতে উপেন ও দুলালের সম্পর্ক কখনওই ‘মসৃন’ ছিল না। ২০০৬ সালে তৃণমূলের টিকিটে বাগদা থেকে প্রথম বার বিধায়ক হয়েছিলেন দুলাল। কিন্তু ২০১১ সালের নির্বাচনে তৃণমূলে তাঁকে আর টিকিট দেয়নি। সেই বার টিকিট পেয়েছিলেন উপেন। জিতে রাজ্যের মন্ত্রীও হয়েছিলেন। শোনা যায়, তখন থেকেই উপেনের সঙ্গে দুলালের সম্পর্কে অবনতি হতে শুরু করে। ২০১৬ সালেও তৃণমূল টিকিট না দেওয়ায় কংগ্রেসে যোগ দেন দুলাল। বাগদায় হাতের প্রার্থী হয়ে তৃণমূলের উপেনকে হারিয়েও দেন। এর কিছু দিনের মধ্যেই আবার তৃণমূলে ফেরেন দুলাল। পরে অবশ্য মুকুল রায়ের সঙ্গে যোগ দেন বিজেপিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন