সুভাষ দত্ত
পুরপ্রধানের পদ থেকে সরে যেতে হচ্ছে তাঁকে। তবু কোনও দুঃখ নেই তাঁর। কিন্তু তিনি চান, গোবরডাঙার বন্ধ হাসপাতাল চালু হোক।
গোবরডাঙার পুরপ্রধান সুভাষ দত্ত শনিবার নিজে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করে দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। এলাকায় এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই রবিবার সকাল থেকে সুভাষবাবুর বাড়িতে মানুষের ভিড় জমে যায়। কেউ কেউ ‘পাশে আছি’ বলে সুভাষবাবুর হাত চেপে ধরছেন। আবার কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। সুভাষবাবু বলেন, ‘‘পুরপ্রধানের পদ থেকে আমি সরে দাঁড়িয়েছি। তাতে আমার কোনও দুঃখ নেই। সে ভাবেই মনকে তৈরি করে নিয়েছি। কিন্তু আমি চাই, মুখ্যমন্ত্রী এলাকার হাসপাতালটি ফের চালু করুক। এতে এলাকার মানুষ উপকৃত হবেন।’’
এ দিকে হাসপাতালের দাবিতে তাঁদের আন্দোলন যেমন চলছিল ঠিক তেমনই চলবে বলে জনিয়েছেন গোবরডাঙাবাসী। তাঁদের কথায়, ‘‘সুভাষবাবুকে পুরপ্রধানের পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য করা হল ঠিকই। কিন্তু আমাদের আন্দোলন থামানো যাবে না। এটি চলবে।’’ গোবরডাঙা পুর উন্নয়ন পরিষদের সহ সভাপতি পবিত্রকুমার মুখোপাধ্যায়েরও একই মত।
সুভাষবাবু অবশ্য ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পুরপ্রধানের পদ থেকে সরে যাওয়ার ইচ্ছার কথা বলেছেন। কিন্তু এলাকাবাসী তা মেনে নিতে নারাজ। গোবরডাঙাবাসীর মতে, হাসপাতালের দাবি জানানোর জন্যেই সুভাষবাবুকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। সোশ্যাল মিডিয়াতেও সুভাষবাবুর পদত্যাগ নিয়ে নানা রকম মন্তব্য করতে শুরু করেছেন এলাকাবাসী। এ দিন গোবরডাঙার স্টেশন চত্বর, খেলার মাঠ, বাজার, চায়ের দোকানে এখন সর্বত্র আলোচনার বিষয় হল সুভাষবাবুর অপসারণ।
তবে বাসিন্দাদের একাংশ মনে করছেন, হাসপাতাল নিয়ে গড়ে ওঠা জনমতের দৃষ্টি অন্য দিকে সরিয়ে দিতেই তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব পুরপ্রধানকে সরতে বাধ্য করলেন। সিপিএম নেতা শঙ্কর নন্দী জানান, হাসপাতালের দাবির জন্য সুভাষবাবুর অপসারণ দুঃখজনক ঘটনা। তাঁর প্রশ্ন, নতুন যিনি পুরপ্রধান হবেন তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী চলবেন তো? নতুন পুরপ্রধান কে হয় এবং গোবরডাঙা হাসপাতাল নিয়ে তার প্রতিক্রিয়া কী হবে, সে দিকেই তাকিয়ে এখন এলাকাবাসী।