Petrapole

৭৫ দিন পরে পণ্য রফতানি চালু করা হল পেট্রাপোলে

রবিবার বেলা আড়াইটে নাগাদ পেট্রাপোল সুসংহত চেকপোস্ট দিয়ে প্রথম ট্রাকটি বাংলাদেশের বেনাপোলে ঢোকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২০ ০৫:৫৫
Share:

সীমান্ত পেরোচ্ছে পণ্যবোঝাই লরি। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

অবশেষে কাটল জট। পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ফের চালু হল বাণিজ্যের কাজ।

Advertisement

রবিবার বেলা আড়াইটে নাগাদ পেট্রাপোল সুসংহত চেকপোস্ট দিয়ে প্রথম ট্রাকটি বাংলাদেশের বেনাপোলে ঢোকে। উচ্ছ্বাসে হাততালি দিয়ে ওঠেন সে দেশে জড়ো হওয়া লোকজন। পেট্রাপোল বন্দরের সেন্ট্রাল ওয়্যারহাউজ কর্পোরেশনের ম্যানেজার প্রমোদ যাদব বলেন, ‘‘বাণিজ্য বন্ধ থাকার প্রধান কারণ ছিল, কোভিড ১৯। তবে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ফের বাণিজ্যের কাজ শুরু করার। জেলাশাসক চিঠি দিয়ে নির্দেশ দিয়েছেন, শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে, যাবতীয় সুরক্ষা নিয়ে বাণিজ্যের কাজ শুরু করার। সেই মতো পণ্য রফতানি শুরু হয়েছে।’’ আমদানিও শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ।

বনগাঁ পুরসভার প্রশাসক শঙ্কর আঢ্যের উপস্থিতিতে এ দিন পণ্য রফতানি শুরু হয়। তিনি বলেন, ‘‘২৪টি ট্রাক এ দিন পণ্য নিয়ে বেনাপোলে গিয়েছে। ভিন্ রাজ্যের ট্রাক চালক-খালাসিরা বেনাপোলে পণ্য খালি করে ফিরে সোজা তাঁদের রাজ্যে চলে যাবেন। স্থানীয় চালক-খালাসি যাঁরা পণ্য নিয়ে বেনাপোলে যাবেন, তাঁদের সুসংহত চেকপোস্টের মধ্যে ১৪ দিন আলাদা করে রাখা হবে।’’ বেনাপোলে পণ্য নামিয়ে ফিরে আসা খালি ট্রাক স্যানিটাইজ করা হবে বলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

Advertisement

লকডাউনের শুরু থেকে কার্যত বন্ধ ছিল বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য। ক্ষতির মুখে পড়েন ভারত-বাংলাদেশের বহু ব্যবসায়ী। শনিবার করোনা-আবহে যাবতীয় সুরক্ষাবিধি মেনে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বাণিজ্যের কাজ চালু করার অনুরোধ জানিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক।

পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জেলাশাসকের চিঠির পরে রবিবারই শুল্ক দফতর বাণিজ্য চালু করতে নোটিস জারি করে। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন বেনাপোল এখন করোনা-মুক্ত গ্রিন জোন। এখন থেকে চালকেরা বেনাপোলে গিয়ে দিনের দিন পণ্য খালি করে ফিরে আসবেন।’’ লকডাউন পরিস্থিতিতে পেট্রাপোল দিয়ে বাণিজ্য বন্ধে কেন্দ্রের কোনও নির্দেশ ছিল না। বরং সীমান্ত দিয়ে অত্যাবশক পণ্যের যাতায়াত চালু রাখার কথাই বলা হয়েছিল। কিন্তু পেট্রাপোল বন্দর বন্ধ রাখা হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক দাবি করে, রাজ্য সরকার কোনও রকম আইনি বিজ্ঞপ্তি জারি না করে একতরফা সীমান্ত বন্ধ করেছে। রাজ্য প্রশাসনের আবার যুক্তি ছিল, বাংলাদেশের জেলাগুলিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোয় দু’দেশের মধ্যে লোকজনের যাতায়াত চালু থাকলে সীমান্তের এ পারেও সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। তবে বাণিজ্য চালুর জন্য ব্যবসায়ী মহলের তরফ থেকে চাপ ছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের চিঠির জেরে নানা জটিলতার পরে পেট্রাপোল দিয়ে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য রফতানি চালু হয়েছিল মে মাসের শুরুতে। দু’একদিন পরেই অবশ্য তা বন্ধ হয়ে যায়। সংক্রমণের আশঙ্কায় রফতানি বন্ধ করার দাবি তোলেন লোডিং-আনলোডিংয়ের কাজে যুক্ত শ্রমিক এবং স্থানীয় গ্রামবাসীদের একাংশও।

পেট্রাপোল এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পরিতোষ বিশ্বাস বলেন, ‘‘রফতানি বন্ধ থাকায় ইতিমধ্যেই ১০০ কোটির বেশি টাকা ট্রাক রাখার পার্কিং ফি দিতে হবে। অনেক পণ্য নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ট্রাকের যন্ত্রাংশও খারাপ হচ্ছে। বাংলাদেশের অনেক ব্যবসায়ী অর্ডার বাতিল করছেন। তবে শেষমেশ রফতানি শুরু হওয়ায় আমরা স্বস্তি পেলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন