মাসখানেক স্কুলে শিক্ষকতা করার পরে জানা গেল, তাঁর নিয়োগপত্রই ভুয়ো। স্কুল শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে ওই শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে।
মন্দিরবাজারের কৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাস দেড়েক আগে কাজে যোগ দেন এনায়েতপুর গ্রামের বছর ছাব্বিশের যুবক দেবাশিস হালদার। প্রধান শিক্ষক সুদেব মাঝিকে দফতরের নিয়োগপত্র দেখিয়েছিলেন তিনি। এরপর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ যুবকটি নিয়মিত ক্লাস নেওয়া শুরু করেন।
স্কুল সূত্রের খবর, স্থানীয় স্কুল পরিদর্শকের কাছে নাম নথিভুক্ত করতে হয় শিক্ষককে। সেই মতো প্রধান শিক্ষক দেবাশিসবাবুর নিয়োগপত্র-সহ চাকরি-সংক্রান্ত নথি পাঠান। নিয়োগপত্র দেখে পরিদর্শক বুঝতে পারেন, সেটি ভুয়ো। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ থেকে পাঠানো হলেও কিছু ত্রুটি স্কুল পরিদর্শকের নজরে আসে। তাঁর সন্দেহ হওয়ায় নিয়োগপত্রের ফটো কপি পাঠান জেলা প্রাথমিক সংসদ ও চেয়ারম্যানের কাছে। সেখান থেকে জানা যায়, নিয়োগপত্রটি জাল।
সুদেববাবু বলেন, ‘‘আমাদের জেলা আধিকারিকদের সকলের সই আমি চিনি না। তাই ওঁর নিয়োগপত্র দেখে বুঝতে পারিনি। স্কুল পরিদর্শকের কাছে পাঠানোর পরে বিষয়টি জানতে পারি।’’
ভুয়ো শিক্ষকের মোবাইলে কোনও ভাবে যোগাযোগ করা যায়নি। এ বিষয়ে মন্দিরবাজারের স্কুল পরিদর্শক নবীন মালাকার বলেন, ‘‘বিষয়টি জানার পরে ১১ নভেম্বর জেলা স্কুল পরিদর্শক ও চেয়ারম্যান এসেছিলেন। সকলে ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাই। সেখানে শিক্ষককে জেরা করতেই তিনি ভুল স্বীকার করে নেন।’’ নবীনবাবু জানান, দেবাশিস দাবি করেছেন, জমি-বাড়ি বন্ধক রেখে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা জোগাড় করেছিলেন। এরপরে বালিগঞ্জ এলাকা থেকে ভুয়ো নিয়োগপত্র জোগাড় করেছিলেন। ভুয়ো শিক্ষকের বিরুদ্ধে ১০ নভেম্বর থানাতেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) উত্তম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নিজেই ভুয়ো নিয়োগপত্র তৈরি করে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। পুলিশের কাছে সে বিষয়ে জানানো হয়েছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ভুয়ো নিয়োগপত্র তৈরির চক্রের খোঁজে তদন্ত চলছে।
কিন্তু এ জন্য আগে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে জেরা করা দরকার। দেবাশিসের খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।