Freudster

সস্তায় চাল-ডাল কিনতে গিয়ে বিপাকে পরিবার

নিশিকান্ত বলেন, ‘‘আমাদের এলাকায় বিএসএফ মাঝে মধ্যে মালপত্র ধরে। তাই ভেবেছিলাম সত্যিই চাল-ডাল ধরা পড়েছে। বুঝিনি এ ভাবে সর্বস্বান্ত হতে হবে।’’    

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:২০
Share:

কম টাকায় চাল-ডাল বিক্রি করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কৌশলে কয়েক হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

Advertisement

বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ থানা সংলগ্ন বনগাঁ-চাকদা সড়কে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগদা থানা এলাকার মাথাভাঙা এলাকার বাসিন্দা নিশিকান্ত ঢালি রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তাঁর ছেলে ভোলা চুয়াটিয়া বাজারে আখ বিক্রি করেন। বুধবার সকালে ভোলা আখ বিক্রি করছিলেন। এক ব্যক্তি এসে তাঁর কাছ থেকে চল্লিশ টাকার আখ কেনে। সে সময়ে ফোনে ওই ব্যক্তি কাউকে বলছিল, প্রচুর চাল-ডাল ধরা পড়েছে। গরিব মানুষদের মধ্যে কম দামে সে সব বিক্রি করা হবে। সে কথা কানে যায় ভোলার। মোবাইলে কথা শেষ হলে ভোলা ওই ব্যক্তিকে বলেন, তিনি কম দামে চাল-ডাল কিনতে চান। ওই ব্যক্তি নিজেকে নাম বলেছিল, ‘শুভম’। জানিয়েছিল, সে বিএসএফের সুবেদার। স্থানীয় ক্যাম্পে কর্মরত।

Advertisement

ভোলা বাড়ি ফিরে বাবাকে ঘটনাটা জানান। গরিব মানুষ নিশিকান্ত ভেবেছিলেন, কম টাকায় যখন চাল-ডাল পাওয়া যাচ্ছে, তখন কিছুটা কিনে রাখলে মন্দ হয় না। পরিবারের প্রয়োজন মিটিয়ে কিছুটা বিক্রি করে বাড়তি আয়ও হতে পারে।

ফোনে তিনি ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেন। শুভম তাকে জানায়, নিশিকান্তকে সে ১০০ বস্তা চাল ও ৫ বস্তা ডাল বিক্রি করবে। সে জন্য টাকা ও আধার কার্ড নিয়ে বনগাঁয় আসতে হবে। ভোলাকে সঙ্গে নিয়ে নিশিকান্ত দুপুর ২ নাগাদ বনগাঁ থানার কাছে পৌঁছে যান।

নিশিকান্ত বলেন, ‘‘স্ত্রী সুচিত্রার হার্টের অসুখ। চিকিৎসার জন্য গরু বিক্রির টাকা ও এক আত্মীয়ের কাছ টাকা ধার করে মোট ১৯ হাজার টাকা নিয়ে গিয়েছিলাম। সব টাকাই খোয়া গিয়েছে। কী ভাবে স্ত্রীর চিকিৎসা করাব জানি না।’’

অভিযোগ, বনগাঁ থানার কাছে ওই ব্যক্তিকে নিশিকান্ত ১৯ হাজার টাকা দেন। ভোলা বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি আমাকে একটি ভ্যানে তুলে দিয়ে জানায়, মতিগঞ্জে একটি গুদামে গাড়িতে চাল-ডাল তোলা হচ্ছে। সেখানে গিয়ে যেন মালপত্র বুঝে নিই। সেই মতো আমি ভ্যানে সেখানে চলে যাই। কিন্তু ওই ঠিকানায় কোনও গুদামেই ছিল না।’’

ছেলেকে ভ্যানে তুলে দিয়ে ওই ব্যক্তি নিশিকান্তকে বলে, আধার কার্ডের একটা ফটোকপি এনেছেন। আরও একটা লাগবে। নিশিকান্ত ফটোকপি করতে চলে যান। কিছুক্ষণ পরে বাবা-ছেলে ফিরে এসে দেখেন, ওই ব্যক্তি বেপাত্তা।

নিশিকান্ত বলেন, ‘‘আমাদের এলাকায় বিএসএফ মাঝে মধ্যে মালপত্র ধরে। তাই ভেবেছিলাম সত্যিই চাল-ডাল ধরা পড়েছে। বুঝিনি এ ভাবে সর্বস্বান্ত হতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন