মরা ডাল কাটা নিয়ে খুশি বৈশাখীর পরিবার

অবশেষে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ বিপজ্জনক ডাল কাটার কাজ শুরু করেছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু হয়েছে কাজটি। এখন কাজ চলছে স্থানীয় চাঁদপাড়া অঞ্চলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৫৯
Share:

বৈশাখীর ছবি হাতে পরিবার। নিজস্ব চিত্র

বড় দেরিতে শুরু হল কাজ।

Advertisement

ছ’বছর আগে মাকে হারিয়েছিল বালিকাটি। আজ যশোর রোডে মরা ডাল কাটা দেখে মায়ের কথাই কেবল মনে পড়ছে উনিশ বছরের শালিনী চট্টোপাধ্যায়ের। প্রশাসন আগে উদ্যোগী হলে তাঁকে আর মাতৃহারা হতে হত না।

২০১২ সালের ৬ মে অটোর উপর মরা গাছের ডাল ভেঙে পড়ে মারা গিয়েছিলেন বনগাঁর আমলাপাড়া এলাকার শালিনীর মা বৈশাখী চট্টোপাধ্যায়। সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে বৈশাখী বনগাঁ শহরের পরিচিত মুখ ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাই যশোর রোডের শুকনো মরা গাছের ডাল কাটার জোর দাবি উঠেছিল। ওই ঘটনার পর থেকে চট্টোপাধ্যায় পরিবার মনেপ্রাণে চাইছিল, যশোর রোডের পাশে থাকা প্রাচীন গাছগুলির শুকনো বিপজ্জনক ডাল নিয়মিত কাটার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।

Advertisement

অবশেষে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ বিপজ্জনক ডাল কাটার কাজ শুরু করেছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু হয়েছে কাজটি। এখন কাজ চলছে স্থানীয় চাঁদপাড়া অঞ্চলে। চাঁদপাড়ারই ১ কিলোমিটারের মধ্যে মণ্ডলপাড়া, যেখানে বৈশাখীদেবীর দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। ফলে, গাছ কাটার কাজ নিয়ে খুশি বৈশাখীর পরিবার। বুধবার সকালে নিজের বাড়িতে বসে বৈশাখীর স্বামী তন্ময় বলেন, ‘‘বিপজ্জনক ডাল কাটা হচ্ছে শুনে ভাল লাগছে। আর হয়তো অকালে কারও প্রাণ চলে যাবে না।’’

এলাকাবাসীর অভিযোগ, যশোর রোডের গাছগুলিতে বিপজ্জনক ডাল থাকার অন্যতম কারণ, কাঠচোরেরা ডাল কেটে রেখে যায়। পরে শুকিয়ে গেলে ডালটি তারা নিয়ে যায়। সে সূত্র ধরেই তন্ময় জানান, এমনই একটি কেটে রাখা ডাল ভেঙে পড়ে বৈশাখী মারা গিয়েছিলেন।

তন্ময় ঠিকাদারের কাজ করতেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকে তাঁর কাজকর্ম একরকম বন্ধই। মানসিক ভাবেও ভেঙে পড়েছিলেন। তখন মেয়ে শালিনীও ছোট ছিল। তার পড়াশোনা দেখার কাজটা জরুরি ছিল। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে শালিনী এখন আইন নিয়ে পড়াশোনা করছেন। বাড়িতে রয়েছেন তন্ময়ের বৃদ্ধা মা অনিমাদেবীও। তাঁরও দেখভাল করতে হয় তন্ময়কে। তবে, মেয়ে বড় হওয়ায় তন্ময় আবার কাজ শুরু করার কথা ভাবছেন।

গাছ কাটা নিয়ে একটা বিতর্ক ছিলই, সেই প্রসঙ্গে তন্ময় জানান, এই গাছ কাটা তো সবুজ ধ্বংস নয়। বিপজ্জনক ডাল কাটার বিষয়টি আলাদা। মরা শুকনো ডাল কেন কাটা হবে না?’’ শালিনীর কথায়, ‘‘গাছের ডাল ভেঙে আমার মতো কেউ যেন তার মাকে না হারায়। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, ডাল কাটার এই কাজ যেন নিয়মিত ভাবে চলে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন