দাম মিলছে না টমেটোর, মাথায় হাত চাষিদের

৫০ পয়সা কিলো দরে টমেটো বিক্রি হচ্ছে পাথরপ্রতিমা এবং নামখানার বিভিন্ন বাজারে। মাথায় হাত কয়েক হাজার টমেটো চাষির।

Advertisement

শান্তশ্রী মজুমদার

পাথরপ্রতিমা শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৭ ০০:৪১
Share:

৫০ পয়সা কিলো দরে টমেটো বিক্রি হচ্ছে পাথরপ্রতিমা এবং নামখানার বিভিন্ন বাজারে। মাথায় হাত কয়েক হাজার টমেটো চাষির।

Advertisement

এ বার নিজের দু’কাঠা জমিতে হাইব্রিড টমেটোর চাষ করেছিলেন পাথরপ্রতিমার দক্ষিণ রায়পুরের চাষি ধনঞ্জয় মিদ্দে ও নিধিরাম মিদ্দে। ফলন প্রচুর হয়েছে। কিন্তু দাম মিলছে না। এখনও বেশিরভাগ টমেটো খেতেই পড়ে রয়েছে।

নামখানার উত্তর চন্দনপিড়ির চাষি লক্ষ্মণ মাইতি নিজের জমিতে টমেটো চাষ করেছিলেন। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘ঋণ নিয়ে চাষ করেছিলাম। দর যে ভাবে নেমে গিয়েছে, তাতে ঋণ কী ভাবে শোধ করব জানি না। এ রকম অবস্থা আগে কোনও দিন হয়নি।’’

Advertisement

মঙ্গলবার পাথরপ্রতিমার মিলন মোড় বা গঞ্জের বাজার এলাকায় রাস্তার উপরে টমেটো ফেলে রেখে বিক্রি করতে দেখা গিয়েছে চাষিদের। পাথরপ্রতিমার মিলন মোড়ে কয়েক জন চাষি বিক্রির জন্য অল্প কিছু টমেটো এনেছিলেন। তাঁরা জানালেন, অবিক্রিত টমেটো রাস্তাতেই ফেলে দিতে হচ্ছে। কারণ, গাড়ি ভাড়ার টাকা মিলছে না।

জেলা কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কাকদ্বীপ মহকুমার মধ্যে সব থেকে বেশি টমেটো চাষ হয় পাথরপ্রতিমায়। তার পরেই রয়েছে নামখানা। গত বছর পর্যন্ত কাকদ্বীপের পাইকারি বাজারে ১০ টাকা কিলো দরে টমেটো বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এ বার বাজারে দাম নেই।

চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সার, রাসায়নিক, কীটনাশকের খরচ বেড়ে গিয়েছে। এখন পাইকারি বাজারে দর না পেলে তাঁদের পথে বসতে হবে। অনেক চাষি শ্রমিকের মজুরি দেওয়ার টাকা নেই বলে খেত থেকে টমেটো তুলতে পারছেন না।

পাথরপ্রতিমা এবং নামখানায় হিমঘর নেই। ফলে টমেটো তুলে আপাতত মজুত করে রাখার উপায় নেই। ধান, আলুর ক্ষেত্রে সরকারি সহায়ক মূল্যে কেনার ব্যবস্থা থাকলেও টমেটো বিক্রির ক্ষেত্রে সে রকম ব্যবস্থা নেই। ফলে সমস্যা দিন দিন বাড়ছে।

পাথরপ্রতিমায় টমেটোর একচেটিয়া চাষ হলেও এখানে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের কোনও ব্যবস্থা নেই। ফলে সমস্যা বেড়েছে আরও। স্থানীয় চাষি অমৃত জানা বলেন, ‘‘একটি কোম্পানি ১ টাকা কিলো দরে ফড়েদের মাধ্যমে টমেটো বিক্রি হচ্ছে বটে, কিন্তু তারা টমেটোর বোঁটা ছাড়িয়ে দিতে বলছে। তার জন্য শ্রমিক লাগাতে হচ্ছে। কিন্তু সেই খরচ কে দেবে?’’

জেলার কৃষি বিপণন আধিকারিক কমল আদক জানালেন, বারুইপুরে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের একটি ইউনিট রয়েছে। সেখানে টমেটো নেওয়া হয়। কিন্তু তার ক্ষমতা সীমাবদ্ধ। কমলবাবু বলেন, ‘‘আপাতত কাকদ্বীপ মহকুমায় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের নতুন ইউনিট খোলার পরিকল্পনা নেই। তবে বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবো।’’ পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর জানা জানান, কৃষি বিপণন এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের সঙ্গে কথা বলে টমেটো চাষিদের সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন