সদ্য হারিয়েছেন মেয়েকে। সেই মেয়েরই চোখ দানের সিদ্ধান্ত নিলেন বাবা।
ঘটনাটি বসিরহাটের হরিশপুরের। মৃতার নাম চামেলি রায় বৈদ্য (২২)। রবিবার দুপুরে বাসের ধাক্কায় জখম হন চামেলিদেবী। স্বামী সমরেশের সাইকেলের পিছনে বছরখানেকের মেয়ে অনিন্দিতাকে কোলে নিয়ে বসেছিলেন তিনি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রবিবার বেলা আড়াইটে নাগাদ হরিশপুরের কাছে টাকি রোডে দু’টি বাস রেষারেষি করতে করতে আসছিল। তারই একটি ধাক্কা মারে সাইকেলে। ছিটকে পড়ে গোটা পরিবার। কোলের শিশুটি পড়ে পাশের খানায়। বাসের চাকায় পিষ্ট হন চামেলিদেবী। দুর্ঘটনার পরে বাসের চালক গাড়ি নিয়ে পালায়। তাকে ধরতে তল্লাশি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দারা সকলকে উদ্ধার করে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। শিশু ও তার বাবা বেঁচে গেলেও চামেলি সন্ধের দিকে মারা যান।
শোকসন্তপ্ত অবস্থাতেও মাথা ঠান্ডা রেখেছিলেন বাবা শঙ্কর রায়। তিনি জানিয়ে দেন, তিনি মেয়ের চোখ দান করতে চান। সেই ইচ্ছায় অসম্মত হয়নি দুই পরিবার। বসিরহাটের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে দু’টি চোখ সংগ্রহ করা হয়।
সোমবার বসিরহাট থানা চত্বরে দাঁড়িয়ে শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘একমাত্র মেয়েই যখন থাকল না, তখন তার চোখ দিয়ে অন্য কেউ দেখতে পারবে ভেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া।’’
বসিরহাটেরই ছেলে স্বর্ণেন্দু রায়ের মস্তিস্কের মৃত্যুর পরে তাঁর বাবা ছেলের দেহদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। মৃতার নিকট আত্মীয় সঞ্জয় মণ্ডল এবং শুভঙ্কর সরকারের বক্তব্য, স্বর্ণেন্দুর বাবা-মায়ের দেখানো পথেই আমরা হাঁটতে চেয়ে চামেলির দেহ দান করব ঠিক করেছিলাম। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে শেষ পর্যন্ত শুধু চক্ষুদানেরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’’