Dengue

দেগঙ্গায় ছড়াচ্ছে জ্বর, বাড়ছে মৃত্যু

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, জ্বর নিয়ে ভর্তি হওয়ার পরেও মৃত্যুর কারণ অন্য লেখা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ রোগীর পরিবার। ক্ষোভ রয়েছে সাধারণ মানুষেরও। দেগঙ্গার কিছু এলাকায় দিন-রাত মশারি টাঙিয়ে, মশার ধূপ জ্বালিয়ে থাকতে হচ্ছে মানুষকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দেগঙ্গা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:০৪
Share:

আতঙ্ক: দিনের বেলাতেও মশারি টাঙানো। দেগঙ্গা। ছবিটি তুলেছেন সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে গোটা এলাকায়। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। কিন্তু তা সত্ত্বেও জ্বরের প্রকোপ ঠেকাতে স্বাস্থ্য দফতর বা প্রশাসন তৎপর নয় বলে অভিযোগ দেগঙ্গার বাসিন্দাদের।

Advertisement

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, জ্বর নিয়ে ভর্তি হওয়ার পরেও মৃত্যুর কারণ অন্য লেখা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ রোগীর পরিবার। ক্ষোভ রয়েছে সাধারণ মানুষেরও। দেগঙ্গার কিছু এলাকায় দিন-রাত মশারি টাঙিয়ে, মশার ধূপ জ্বালিয়ে থাকতে হচ্ছে মানুষকে।

বাসিন্দারা জানান, ইতিমধ্যে কলসুর, শোলার আটি, কাছারিপাড়া ও চাঁদকাটি গ্রামে বেশ কয়েকজনের জ্বরে মৃত্যু হয়েছে। তবে সরকারি ভাবে কোনও স্বাস্থ্যশিবির না খোলায় এলাকার মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। দেগঙ্গার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সূরজ সিংহ বুধবার এলাকা ঘুরে দেখেন। তিনি বলেন, ‘‘চিকিৎসকের সমস্যা রয়েছে। তবু চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।’’

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, রবিবার দেগঙ্গার চাঁপাতলা পঞ্চায়েতের গোঁসাইপুর গ্রামে জ্বরে মৃত্যু হয় মেহেরুন্নেসা বিবি (৩৬) নামে এক মহিলার। তিন দিন আগে জ্বর নিয়ে তিনি ভর্তি হন হাড়োয়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। প্লেটলেট নেমে যাওয়ায় অবস্থার অবনতি হয়। বারাসত জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সোমবার সেখান থেকে কলকাতার আরজিকরে স্থানান্তরিত করা হয়। রোগীর অবস্থা ভাল না থাকায় হাসপাতালেই রেখে দেন পরিবার। পরে সেখানেই মারা যান তিনি।

মেহেরুন্নেসার স্বামী নুর ইসলাম মোল্লা বুধবার বলেন, ‘‘মুখে চিকিৎসকেরা ডেঙ্গির কথা বললেও মারা যাওয়ার পরে ডেথ সার্টিফিকেটে তা লেখা হয়নি। জ্বরে আমার স্ত্রীর শরীর দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। তা-ও স্বীকার করেননি চিকিৎসকেরা।’’

জ্বরে ভুগছিলেন দেগঙ্গার দক্ষিণ কলসুর পঞ্চায়েতের দিঘিরধার গ্রামের আব্দুল আলিম সর্দার (২৩)। সোমবার মারা যান। আলিমের কাকা রুহুল আমিন সর্দার এ দিন জানান, দিন কয়েক আগে জ্বর দেখা দেওয়ায় রুদ্রপুর হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখান থেকে পাঠানো হয় বারাসত জেলা হাসপাতালে। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১২ সেপ্টেম্বর কলকাতার আরজিকরে পাঠানো হয়। রুহুল বলেন, ‘‘কী জ্বর হয়েছে জানতে চাইলে চিকি‌ৎসক বলেন ডেঙ্গি। অথচ ১৯ সেপ্টেম্বর মৃত্যুর পরে সে সব কিছুই লেখা হয়নি।’’

দেগঙ্গার ব্লকের দেগঙ্গা ১, চাঁপাতলা, চৌরাশি, কলসুর পঞ্চায়েতে জ্বরে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছেস সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন স্থানীয় বিডিও দেবব্রত সাউ। তিনি বলেন, ‘‘মৃত্যুর কারণ জানতে জেলা ও ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। জ্বর রোধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা কী নেওয়া যায় তা-ও দেখতে বলেছি।’’ মঙ্গলবার রাতে দেগঙ্গার বিধায়ক রহিমা বিবি কলসুরে আব্দুল আলিমের বাড়িতে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন