দেখা নেই পরাজিত প্রধানদের

সিপিএমের কিছু প্রধান পঞ্চায়েতে যাচ্ছেন না বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এ দিকে ভোটের জন্য পঞ্চায়েতে যে সমস্ত কাজ আটকে ছিল তা এখন পুরোদমে শুরু হয়েছে।  

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৮ ০২:১১
Share:

পঞ্চায়েত ভোটে বনগাঁ মহকুমাতে কয়েকজন প্রধান হেরে গিয়েছেন। কিছু পঞ্চায়েতে পালাবদলও হয়েছে। কিন্তু যতদিন না পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন হয় ততদিন আগের মতোই কাজকর্ম চলবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

কিন্তু এই অবস্থায় সিপিএমের কিছু প্রধান পঞ্চায়েতে যাচ্ছেন না বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এ দিকে ভোটের জন্য পঞ্চায়েতে যে সমস্ত কাজ আটকে ছিল তা এখন পুরোদমে শুরু হয়েছে।

প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, প্রধানেরা ভোটে হেরে গেলেও এখনও প্রায় আড়াই মাস তাঁরাই প্রধান পদে থাকবেন। কারণ নতুন পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন হবে অগস্ট মাস নাগাদ। ফলে সব প্রধানদেরই পঞ্চায়েত অফিসে আসতে হবে। সবাই তাই করছেন। শুধু কয়েকজন ছাড়া। এর মধ্যে দু’জন সিপিএমের প্রধান রয়েছেন।

Advertisement

বনগাঁ ব্লকের ট্যাংরা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের বেবি তালুকদার পঞ্চায়েতে যাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। ওই পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পঞ্চায়েত সিপিএমের ছিল। কিন্তু এ বার তা তৃণমূল দখল করেছে। বেবি ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু হেরে গিয়েছেন।

বেবি বলেন, ‘‘মন থেকে আর পঞ্চায়েত অফিসে যেতে ভাল লাগছে না। তাই যাচ্ছি না। আমাকে পঞ্চায়েতে যেতে কেউ বাধা দেয়নি। পঞ্চায়েত অফিসে না গেলেও কোনও কাজ থমকে থাকবে না। বাড়িতে এসে আমার সই করিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন কর্মীরা। ফোনেও যোগাযোগ রাখছি।’’ কিন্তু প্রধান পঞ্চায়েত অফিসে না গেলে বাস্তবে কাজকর্ম স্বাভাবিক ভাবে চলতে পারে কিনা, তা নিয়ে এলাকার মানুষ ও প্রশাসনের কর্তাদের মধ্যে সংশয় রয়েছে।

বাগদা ব্লকের বয়রা গ্রাম পঞ্চায়েতটি এ বার সিপিএমের হাত থেকে তৃণমূল দখল করেছে। প্রধান সিপিএমের সবিতা বিশ্বাস নিজেও পরাজিত হয়েছেন। ভোটের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে কিছুক্ষণের জন্য তিনি প্রথম পঞ্চায়েতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘ভাবছি, কিছুদিন পর ফের অফিসে যাওয়া শুরু করব।’’ তবে পরিস্থিতি দেখে বুঝে তবেই তিনি অফিসে যাবেন। সবিতা বলেন, ‘‘চারিদিকে নানা রকম কথাবার্তা শুনছি। আমি নিজেও ভোটের পর কয়েকদিন বাড়িতে ছিলাম না। আতঙ্ক রয়েছে।’’ তিনি জানান, পঞ্চায়েতের যে সব কাজ বাকি আছে তার টেন্ডার করা প্রয়োজন। পঞ্চায়েত সচিবকে টেন্ডার করার কথা জানিয়েছেন বলে দাবি সবিতার। তিনি বলেন, ‘‘শুনেছি, জয়ী তৃণমূলের সদস্যেরা পঞ্চায়েতে গিয়ে বৈঠকও করছেন।’’ তবে সবিতা যদি পঞ্চায়েতে গিয়ে কাজ করতে চান, তা হলে তৃণমূলের কোনও অসুবিধা নেই বলে জানান দলের বাগদা ব্লকের কার্যকরী সভাপতি পরিতোষ সাহা।

চৌবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতটি এ বার বামেদের হাত থেকে বিজেপি দখল করেছে। বিজেপি নেতা রামপদ দাস বলেন, ‘‘প্রধান শিবানী সিংহ এমনিতেই নিয়মিত অফিসে আসতেন না। উনি এখন স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে চাইলে আমাদের দিক থেকে কোনও সমস্যা হবে না। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি।’’

গাইঘাটার রামনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান মহুয়া বিশ্বাস হালদার এ বারের ভোটে হেরে গেলেও নিয়মিত অফিসে আসছেন। কাজকর্মও করছেন। পঞ্চায়েতে এ বার তৃণমূল জয়ী হয়েছে। প্রধান জানান, একশো দিনের প্রকল্পে কাজ শুরু হয়েছে। কাজ করতে কোনও অসুবিধা হচ্ছে না।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হেরে যাওয়া প্রধানেরা ঠিকমতো পঞ্চায়েতে না যাওয়ার কারণে কাজকর্ম একটু হলেও থমকে রয়েছে। এমনিতেই ভোটের কারণে বেশ কিছু দিন কাজ হয়নি। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের টাকা, চতুর্দশ অর্থ কমিশনের টাকা প্রায় সব পঞ্চায়েতেই পড়ে আছে। সেই সব টাকায় দ্রুত কাজ শুরু করতে পদক্ষেপ করছে প্রশাসন। বিশেষ করে বর্ষার আগে নিকাশি নালা পরিষ্কার, বন জঙ্গল সাফাইয়ের কাজ থমকে রয়েছে।

মহকুমাশাসক কাকলি মুখেপাধ্যায় বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের থমকে থাকা কাজে গতি আনতে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করা হয়েছে। শুক্রবার এ বিষয়ে ব্লক আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকও করেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement