বেআইনি ভাবে মাটি কাটার অভিযোগ উঠছিল বেশ কিছু দিন ধরে। অভিযান চালিয়ে পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করেছে। আটক করা হয়েছে কয়েকটি মাটি-ভর্তি ট্রাক্টর।
ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের বাদুড়িয়ার আধিকারিক সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মাটি চুরি ঠেকাতে পুলিশ, ভূমি দফতর, বিডিও অফিসের আধিকারিকেরা যৌথ অভিযান শুরু করেছেন। যারা এই কারবারের সঙ্গে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে।
গত কয়েক বছর ধরে বাদুড়িয়ার বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যেই মাটি কাটা চলে। অভিযোগ, চাষের জমি থেকেও মাটি কাটা হয়। গ্রামবাসীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে অবশেষে নড়ে বসেছে পুলিশ-প্রশাসন। গত কয়েক দিনের অভিযানে ধরা পড়েছে কয়েক জন। পান্তাপাড়া, রঘুনাথপুর থেকে আটক করা হয়েছে ট্রাক্টর, ট্রলি-সহ সরঞ্জাম।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ১০ শতক জমির চরিত্র পরিবর্তন করতে হলে ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অনুমতি প্রয়োজন। ১৫ শতক হলে মহকুমা দফতরের অনুমতি প্রয়োজন। তার বেশি হলে জেলা ভূমি সংস্কার কর্মকর্তার অনুমতি নিতে হবে।
কিন্তু সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী মাটি কেটে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ট্রাক্টর ট্রলিতে করে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করছে। এ ভাবে পুকুর ভরাট করে রাতারাতি দোকান-বাড়িও তৈরি হচ্ছে। জমি কেটে মাছের ভেড়ি করা হচ্ছে। আবার অনেক সময়ে মাটি তুলে বিক্রি করা হচ্ছে ইটভাটায়।
বাসিন্দারা জানালেন, এক ট্রলি কিংবা এক গাড়ি মাটি ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় কেনেন ব্যবসায়ীরা। সেই মাটি চার থেকে আটশো টাকায় বিক্রি হয়। একবার চাষ জমি কেটে মাটি তোলা হলে ওই জমির আশেপাশের জমিও বিক্রি করতে বাধ্য হন চাষিরা। কারণ, নিচু জমিতে সেচের জল নেমে যায়। উচুঁ জমিতে জল না দাঁড়ানোয় ফসল ভাল হয় না।
এলাকাবাসী জানালেন, মাটি ব্যবসায় অনেক প্রভাবশালী মানুষ জড়িয়ে। প্রতিবাদ করতে গেলে খুনের হুমকিও মেলে। বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতা। ধরপাকড় শুরু হলে কিছু দিন কারবার বন্ধ থাকে। কিন্তু পরে ফের চালু হয়।