গত কয়েক মাসে রাস্তায় ভুয়ো টাকার বান্ডিল দেখে প্রলোভিত হয়ে অচেনা যুবকের হাতে সোনার গয়না তুলে দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা, গাইঘাটা, অশোকনগর, বিরাটি, দমদমের মতো এলাকার কিছু মহিলা। মাস দুয়েক আগে ওই প্রতারণা চক্রে জড়িত অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। শনিবার বিকেলে মছলন্দপুরের একটি মাঠে জড়ো হওয়া ওই চক্রের আরও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হল। তাদের কাছ থেকে দু’টি গুলি, আগ্নেয়াস্ত্র, ভোজালি এবং রড উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম খোকন দাস, অনুপ মণ্ডল, নারান দাস, শেখ ফুরখান এবং জগদীশ গায়েন। তারা যথাক্রমে বিড়া, দমদম, ঠাকুরনগর, শ্রীপুর ও নোয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা দিনের বেলা প্রতারণা চক্র চালাত। রাতে ডাকাতি করত। অনুপই দলটির পাণ্ডা। রবিবার ধৃতদের বারাসত জেলা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
তদন্তকারীরা জানান, মূলত হাট-বাজার বা কোনও জমজমাট এলাকা চক্রটি বেছে নিত তাদের কাজের জন্য। চার পাঁচ জন সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ত। তাদের কেউ কোনও এক মহিলার সঙ্গে গিয়ে আলাপ জমাত। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে চক্রের অন্য সদস্য গিয়ে একটি ভুয়ো টাকার বান্ডিল দেখিয়ে জানাত, সে বান্ডিলটি খুঁজে পেয়েছে। ওটি মহিলার কিনা। মহিলা না করলে ওই সদস্য ফিরে যেত। পরে ওই মহিলার সঙ্গী বান্ডিলটি নিয়ে নেওয়ার লোভ দেখাত। পরে চক্রের দ্বিতীয় সদস্যের খোঁজ করে ওই এলাকা থেকেই কিছু সোনার গয়নার বিনিময়ে টাকার বান্ডিলটি নিতেন মহিলা। তদন্তে জানা গিয়েছে, টাকার বান্ডিলটি আসল নয়। পাঁচশো বা একশো টাকার নোটের সাইজে কাগজ কাটা হতো। তা দিয়েই বান্ডিল তৈরি হতো। উপরে-নীচে কয়েকটি আসল নোট রাখা হতো। পরে মহিলারা বুঝতে পারতেন তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন।
দিন বারো আগে বাদুরিয়া থানা এলাকার এক মহিলা মছলন্দপুর এলাকায় একই ভাবে প্রতারিত হন। শনিবার সকালে তিনি মছলন্দপুরে ওই চক্রের সদস্যদের চিনতে পারেন। তিনিই পুলিশে খবর দেন। হাবরা থানার আই সি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ওই চক্রের সদস্যেরা হাবরার শ্রীপুরের বাসিন্দা নারান দাসের কাছে গয়না বিক্রি করত। নারানকে আগেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। দিন কয়েক আগে জামিন পেয়ে সে ফের ওই কাজ শুরু করে।