কোটালের জল ঢুকে ক্ষতি ফসলে, নষ্ট মাছ

জানা গিয়েছে, এ বারের বৃষ্টিতে সাগর ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৮০০ মাটির বাড়ি ধসে গিয়েছে, নষ্ট হয়েছে অন্তত ৪৫০টি পানের বরজ। ঘোড়ামারা দ্বীপে ফেরিঘাটের বিস্তীর্ণ অংশ ধসে গিয়েছে মুড়িগঙ্গায়।

Advertisement

শান্তশ্রী মজুমদার

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৭ ০৩:৩৯
Share:

জলমগ্ন: হিঙ্গলগঞ্জের সাহেবখালিতে। নিজস্ব চিত্র

আগামী কয়েক বছর আর চাষ করতে পারবেন না সাগরের শিবপুরের বাসিন্দা জয়েদ আলি। কারণ এ বছর কোটালে জমিতে জল ঢুকে নষ্ট হয়ে গিয়েছে ফসল। নষ্ট হয়েছে পুকুরের মাছও।

Advertisement

আয়লার পর থেকে সাগরের ধবলাটের ওই গ্রামে প্রায় তিন কিলোমিটার কোনও বাঁধ তৈরি হয়নি। শুধু সাগর নয়, টানা বৃষ্টিতে মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় বাঁধের অবস্থা খারাপ হয়েছে। তার মধ্যে আবার অমাবস্যার কোটালের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েকটি জায়গা। গত বছরের তুলনায় এখন বৃষ্টিতে জলের স্তর অন্তত দেড় ফুট বেড়ে গিয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের।

জায়েদ আলির কথায়, ‘‘বোটখালি অঞ্চলে বেশ কয়েক বিঘে জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। বীজতলা আর অবশিষ্ট নেই। চিন্তায় রয়েছি। কী হবে?’’ সাত বছর কেটে গিয়েছে, আয়লায় ধসে যাওয়া বাঁধ এখনও তৈরি করা হয়নি। তার জেরে কোটালে ধবলাটের বসন্তপুর এবং শিবপুর বার বার প্লাবিত হচ্ছে। এ বছরও একইরকম ভাবে জল ঢুকে নষ্ট হয়েছে বেশ কয়েক বিঘে পুকুর, জমি। প্রবল বৃষ্টির সঙ্গে কোটালের জেরে এ বছর বিপত্তি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা।

Advertisement

সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা জানান, নথিভুক্ত বর্গাদার নয়, এরকম কিছু ভাগচাষি আছে যাঁরা স্বত্ত্ব দাবি করছেন। তা ছাড়াও কিছু মালিক রয়েছেন যাঁদের কোনও হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁর কথায়, ‘‘তাই বাঁধ তৈরিতে একটু দেরি হচ্ছে। তবে অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) এর সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। দ্রুত সমাধান হবে।’’

জানা গিয়েছে, এ বারের বৃষ্টিতে সাগর ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৮০০ মাটির বাড়ি ধসে গিয়েছে, নষ্ট হয়েছে অন্তত ৪৫০টি পানের বরজ। ঘোড়ামারা দ্বীপে ফেরিঘাটের বিস্তীর্ণ অংশ ধসে গিয়েছে মুড়িগঙ্গায়। সেখানে মেরামতের কাজ করছে সেচ দফতর। বীজতলা নষ্ট হয়েছে অন্তত ৭০ শতাংশ জমিতে।

নামখানার মৌসুনি দ্বীপের বালিয়াড়ায় দীর্ঘদিন থেকে আয়লার বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, মুড়িগঙ্গার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা প্রয়োজন। কিন্তু তা হচ্ছে না প্রায় একই কারণে। জমি জটে কয়েক কিলোমিটার বাঁধের কাজ আটকে রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। তবে এ বছর কোটালে কুসুমতলারও বেশ কিছু বাড়িতে জল ঢুকেছে। নোনাজল ঢুকে ফসল ও পুকুরের মাছ নষ্ট হয়েছে।

বাঁধের অবস্থা খারাপ রয়েছে পাথরপ্রতিমার দক্ষিণ রায়পুরে এবং কাকদ্বীপের নাদাভাঙা অঞ্চলে, ফ্রেজারগঞ্জের দাস কর্ণার এবং হাতি কর্ণারে বাঁধে কোনওরকমে ঠেকা দিয়ে কাজ চলছে। বার বার কাজ হলেও ভাঙছে নামখানার নারায়ণগঞ্জ। তবে ফ্রেজারগঞ্জে জরুরি ভিত্তিতে মেরামতির কাজ করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে সেচ দফতর থেকে। সেচ দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নমিত সরকার বলেন, ‘‘বাঁধ এ বছর এখনও কোথাও ভাঙেনি। তবে সব জায়গাতেই কাজ করছি আমরা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement