নৌকোয় উঠলেই জ্যাকেট

নদী পেরোতে গেলে পরতে হবে লাইফ জ্যাকেট।তেলেনিপাড়া জেটিঘাট জলে তলিয়ে যাওয়ার পরে প্রায় প্রতিটি ফেরিঘাটেই লাইফ জ্যাকেট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।

Advertisement

বিতান ভট্টাচার্য

ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৭ ০১:৩১
Share:

হাতে-লাইফ: নৈটি ফেরিঘাটে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

নদী পেরোতে গেলে পরতে হবে লাইফ জ্যাকেট।

Advertisement

তেলেনিপাড়া জেটিঘাট জলে তলিয়ে যাওয়ার পরে প্রায় প্রতিটি ফেরিঘাটেই লাইফ জ্যাকেট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। বিপদ এড়ানোর জন্যই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসনের এক কর্তা।

প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, শুধু লাইফ জ্যাকেট নয়, বড় নৌকো বা লঞ্চগুলিতে সব থেকে বেশি ১০০ জন যাত্রী এবং মাঝারি নৌকোয় ৫০ জন যাত্রীর বেশি নেওয়া যাবে না। প্রতিটি ফেরিঘাটের কাউন্টার থেকে টিকিটের সঙ্গেই কমলা রঙের লাইফ জ্যাকেট ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের। জ্যাকেটগুলি পরার জন্য ঘাটের কর্মীরা যাত্রীদের অনুরোধও করছেন। সচেতন যাত্রীদের কেউ কেউ নৌকোয় ওঠার আগেই জ্যাকেট পরে নিচ্ছেন। কিন্তু অধিকাংশই ঘাট কর্মীদের অনুরোধ শুনে জ্যাকেট হাতে নিয়ে নৌকোয় উঠছেন। গঙ্গা পেরিয়ে ও-পারের ঘাটের কর্মীদের কাছেই জ্যাকেট হস্তান্তর করা হচ্ছে।

Advertisement

নদীপথের যাত্রীদের অধিকাংশেরই দাবি, এই ব্যবস্থা নিরাপত্তার স্বার্থে খুব ভাল। তবে এই জ্যাকেট অনেকেই পরতে না চাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মলয় ঘোষ, গাড়ুলিয়ার চেয়ারম্যান সুনীল সিংহদের কথায়, ‘‘প্রয়োজনে আমরাই ঘাটগুলিতে নিয়মিত নজর রেখে যাত্রীদের জ্যাকেট পরার অনুরোধ করব। এটা বাধ্যতামূলক করতে হবে।’’

ভাটপাড়ার আতপুর ফেরিঘাটে অন্য কোনও পরিকাঠামো তৈরি হয়নি। যাত্রী শেড বা শৌচালয় কিছুই নেই। কিন্তু লাইফ জ্যাকেট যাত্রীদের দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।

ব্যারাকপুরের শ্যাওড়াফুলি ঘাট, পানিহাটির ফেরিঘাট, নৈহাটি, জগদ্দলের ফেরিঘাটগুলিতেও লাইফ জ্যাকেট পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। প্রশাসনের কর্তারা এর ব্যবহার যাতে হয় তা দেখার কথা বলেছেন সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলিকেও। ভাটপাড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সোমনাথ তালুকদার বলেন, ‘‘নদী পারাপারের সময়ে লাইফ জ্যাকেট বাধ্যতামূলক ভাবেই পরা উচিত। অনুরোধ করার পরেও এইটুকু সচেতনতা যাত্রীদের কাছ থেকে আশা করা যায়।’’

কিন্তু যাত্রীদের অনেকের অজুহাত, বহু ব্যবহৃত এই লাইফ জ্যাকেট পোশাকের উপরে পরলে অফিস বা কোনও অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় পোশাক নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তা ছাড়া, দিনের বেলা ভীষণ গরম আর প্রবল আর্দ্রতায় পোশাকের উপর লাইফ জ্যাকেট গায়ে চাপালে অসুস্থ হয়ে পড়ারও আশঙ্কাও থাকে। তবে বিপদ বুঝলে গায়ে পরে নেবেন জ্যাকেট, জানালেন অনেকেই।

নৈহাটি ঘাট পারাপার করেন স্কুল শিক্ষক জয়নুল হোসেন। তিনি বলেন, ‘‘লাইফ জ্যাকেট অনেকেই হাতে ধরে থাকেন। সকলের পোশাক সমান পরিষ্কার থাকে না। তাই আগের যাত্রীর ব্যবহার করা লাইফ জ্যাকেট অনেকেই পরতে চান না।’’

আগামী সপ্তাহে প্রশাসনিক বৈঠক করতে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে আসার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। এ দিকে, এখনও বন্ধ পাঁচটি ফেরিঘাট। এই মুহূর্তে তড়িঘড়ি ঘাট সংস্কার সম্ভব নয় ঠিকই, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়লে জবাব দেওয়ার মতো খড়কুটো খুঁজতেই আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন ফেরি সার্ভিসের ইজারাদারেরা। জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুরসভাগুলিও চাপ তৈরি করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন