চার মাস আগে গরিব মানুষের বাড়ি তৈরির জন্য টাকা এসেছে বাগদা ব্লক অফিসে। উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কয়েক মাস পরেও সেই টাকা বণ্টন করা হয়নি।
ব্লক প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আচরণবিধি লাগু হওয়ার আগের দিনে বাগদা ব্লকে ২০১৫-২০১৬ আর্থিক বর্ষে গীতাঞ্জলি প্রকল্পের জন্য মোট ২ কোটি ১২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা আসে। কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতায় সেই টাকা এখনও উপভোক্তাদের কাছে যায়নি। টাকা ফিরে যাওয়ার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। কেন এই সমস্যা সেই নিয়ে ব্লক প্রশাসনের কর্তারা সরকারিভাবে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গীতাঞ্জলি প্রকল্পের উপভোক্তারা দু’টি কিস্তিতে মোট ৭০ হাজার টাকা পান। এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে বিপিএল তালিকায় নাম না থাকলেও চলে। তবে উপভোক্তাকে বাস্তবে গরিব হতে হবে। নিয়ম অনুযায়ী, বিডিও প্রথমে উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি করে মহকুমাশাসকের কাছে পাঠান। মহকুমাশাসক পাঠান জেলাশাসকের কাছে।
বাগদা ব্লকেও এই নিয়ম মেনে তালিকা তৈরি হয়। কিন্তু বিধানসভা ভোট এসে যাওয়ায় টাকা বিলি করা যায়নি। উপভোক্তারা আশা করেছিলেন, ভোটের ফল বেরোনোর পরে টাকা পাবেন। কিন্তু ভোট মেটার পরে কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও টাকা মেলেনি।
বাগদা ব্লক অফিস সূত্রের খবর, উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি নিয়ে বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির সদ্য প্রাক্তন সভাপতি তৃণমূলের (সদ্য পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন) শম্পা অধিকারীর সঙ্গে বিডিওর মতপার্থক্যের জেরেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। বিডিও মালবিকা খাটুয়া এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে শম্পাদেবীর দাবি, ‘‘কী কারণে টাকা বিলি করা যায়নি সেটা বিডিও বলতে পারবেন। বিডিও নিজের মতো করে তালিকা তৈরি করেছেন। উনি আমাকে তালিকা দেখাননি। অথচ প্রকৃত গরিব কারা সেটা আমরাই ভাল জানি। বিষয়টি জেলাশাসককে জানিয়েছি।’’ যদিও জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, গীতাঞ্জলির তালিকা জনপ্রতিনিধিদের দেখানো বাধ্যতামূলক নয়।
বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কার্তিক বাইনের পাল্টা দাবি, (ভোটের আগে তিনি তৃণমূল থেকে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন), ‘‘প্রশাসনের কর্তাদের সদিচ্ছা থাকলেও পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতির বিরোধিতার জন্যই ওই টাকা দেওয়া যায়নি।’’
তবে মহকুমা শাসক সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের আশ্বাস, ‘‘সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত টাকা বিলির ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হবে।’’
অনাস্থায় হার সিপিএমের। সিপিএমের হাত থেকে আরও একটি পঞ্চায়েত ছিনিয়ে নিল তৃণমূল। বসিরহাট ২ ব্লকের কচুয়া পঞ্চায়েতে তৃণমূলের আনা অনাস্থায় শুক্রবার ভোটাভূটিতে ১২-০ ব্যবধানে অপসারিত হলেন সিপিএমের প্রধান। এই নিয়ে বসিরহাট মহকুমায় ২০০টির মধ্যে ১৭২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল নিল তৃণমূল। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কচুয়া পঞ্চায়েতে মোট আসন ১৯টি। ২০১৩ সালের ভোটে বামেরা পেয়েছিল ১১টি আসন। কংগ্রেস পেয়েছিল ৪টি। তৃণমূল ২টি এবং একটি করে আসনে জয়ী হয় বিজেপি ও নির্দল প্রার্থীরা। সম্প্রতি বামেদের থেকে ৪ জন, কংগ্রেসের ২ জন এবং বিজেপি ও নির্দল প্রার্থীরা তৃণমূলে যোগ দেন। সিপিএমের প্রধান রিনা শূরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের অভিযোগে অনাস্থা আনেন। এ দিন সিপিএম সদস্যেরা পঞ্চায়েতে হাজির না হওয়ায় ভোটাভুটিতে অপসারিত হন সিপিএমের প্রধান।