ওয়াকফ সম্পত্তির বিবরণ কেন্দ্রীয় পোর্টালে নথিভুক্তকরণের সময়সীমা বাড়াচ্ছে না কেন্দ্র। — ফাইল চিত্র।
ওয়াকফ সম্পত্তির বিবরণ কেন্দ্রীয় সরকারের ‘উমিদ’ পোর্টালে নথিভুক্ত করার সময়সীমা শেষ হচ্ছে শনিবার। সুপ্রিম কোর্ট আগেই জানিয়ে দিয়েছিল, এই সময়সীমা আর বাড়ানো সম্ভব নয়। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের সেই নির্দেশ মনে করিয়ে দিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু জানান, ওয়াকফ সম্পত্তির বিবরণ সংশ্লিষ্ট পোর্টালে ‘আপলোড’ করার ক্ষেত্রে সময়সীমার ব্যাপারে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে সাময়িক ছাড়ের কথাও জানিয়েছেন কিরেন।
ওয়াকফ সম্পত্তি কেন্দ্রীয় পোর্টালে নথিভুক্ত করা বাঞ্ছনীয়। গত সোমবার ওয়াকফ মামলায় এমনই জানায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের বেঞ্চ। তবে বেঞ্চ আরও উল্লেখ করেছে, নথিভুক্ত করার সময় যদি কোনও প্রযুক্তিগত ত্রুটি নজরে আসে তা হলে সেটা ওয়াকফ ট্রাইবুনালের কাছে জানানো যেতে পারে। সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদনও করার সুযোগ থাকবে। ট্রাইবুনাল তা বিবেচনা করতে পারে।
শনিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, অনেক মুতাওয়ালিস (যাঁরা ওয়াকফ সম্পত্তি দেখভাল করেন) নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পত্তি ‘উমিদ’ পোর্টালে নথিভুক্ত করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করতে পারেননি, তাঁদের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারেন। আগামী তিন মাস তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক বা কঠোর পদক্ষেপ করা হবে না! আরোপ করা হবে না জরিমানাও।
উল্লেখ্য, নিয়ম অনুসারে, যাঁরা ওয়াকফ সম্পত্তি আপলোড করবেন না, তাঁদের ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। যাঁরা এই পোর্টালে সম্পত্তি নথিভুক্ত করবেন না, তাঁদের সম্পত্তির অবস্থা বাতিল করা হবে এবং পরে ওয়াকফ ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে পুনরায় নথিভুক্তকরণ করা যাবে। সেই ক্ষেত্রেই বিশেষ ছাড় দিয়েছে কেন্দ্র।
ওয়াকফ সম্পত্তি সরকারি পোর্টালে নথিভুক্ত করার জন্য গত ৬ জুন একটি নির্দেশিকা জারি করে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই নির্দেশিকায় ‘উমিদ’ পোর্টালের কথা বলা হয়। নির্দেশিকায় বলা হয়, ভারত জুড়ে সব ওয়াকফ সম্পত্তির বিবরণ ছ’মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পোর্টালে নথিভুক্ত করতে হবে। সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে ৬ ডিসেম্বর। শনিবার রাত ১২টার আগে পর্যন্ত ওয়াকফ সম্পত্তি নথিভুক্ত করা যাবে কেন্দ্রীয় পোর্টালে।
ওয়াকফ সংশোধনী বিলের পক্ষে লোকসভায় ২৮৮টি ভোট পড়েছিল। বিপক্ষে গিয়েছিল ২৩২টি ভোট। অন্য দিকে রাজ্যসভায় ১২৮ জন সাংসদ এই বিলের পক্ষে ভোট দেন এবং বিপক্ষে ভোট পড়ে ৯৫টি। সংসদের উভয় কক্ষে এই সংশোধিত বিল পাশ হওয়ার পরে গত ৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সম্মতিক্রমে সেটি আইনে পরিণত হয়। তবে সেই সংশোধনী সেই আইন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা।