ওয়াকফ সম্পত্তির বিবরণ নথিভুক্ত করার সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদনের শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। — ফাইল চিত্র।
ওয়াকফ সম্পত্তির বিবরণ কেন্দ্রীয় সরকারের ‘উমিদ’ পোর্টালে নথিভুক্ত করার সময়সীমা আরও ছ’মাস বাড়িয়ে দেওয়া হোক! সুপ্রিম কোর্টে এমনই আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু সোমবার দেশের শীর্ষ আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দিল। তবে আদালত এ-ও জানিয়েছে, যদি কোনও অসুবিধা হয় বা কোনও ক্ষেত্রে সময়সীমা বৃদ্ধির প্রয়োজন হয়, তবে সংশ্লিষ্ট ট্রাইবুনালে আবেদন করা যেতে পারে।
ওয়াকফ সম্পত্তি কেন্দ্রীয় পোর্টালে নথিভুক্ত করা বাঞ্ছনীয়। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের বেঞ্চ এমনই জানিয়েছে। তবে বেঞ্চ আরও উল্লেখ করেছে, নথিভুক্ত করার সময় যদি কোনও প্রযুক্তিগত ত্রুটি নজরে আসে তা হলে সেটা ওয়াকফ ট্রাইবুনালের কাছে জানানো যেতে পারে। সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদনও করার সুযোগ থাকবে। ট্রাইবুনাল তা বিবেচনা করতে পারে।
সোমবারের শুনানিতে বেঞ্চ মামলাকারীদের উদ্দেশে বলে, ‘‘আপনারা ট্রাইবুনালের কাছে যান। নির্দিষ্ট মামলার ভিত্তিতে তারা সিদ্ধান্ত নেবে। ওয়াকফ আইন আমরা নতুন করে লিখতে পারি না। আইনের প্রয়োগ হতে দিন। আমরা কেন হস্তক্ষেপ করব?’’
ওয়াকফ সম্পত্তি সরকারি পোর্টালে নথিভুক্ত করার জন্য গত ৬ জুন একটি নির্দেশিকা জারি করে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই নির্দেশিকায় ‘উমিদ’ পোর্টালের কথা বলা হয়। নির্দেশিকায় বলা হয়, ভারত জুড়ে সব ওয়াকফ সম্পত্তির বিবরণ ছ’মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পোর্টালে নথিভুক্ত করতে হবে। সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামী ৫ ডিসেম্বর। আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী কপিল সিব্বলের সওয়াল, ‘‘ছ’মাসের সময় খুবই কম। অনেকেই এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানেন না। সব বিবরণ সংগ্রহ করে তা পোর্টালে নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে ছ’মাসের সময়সীমা কম।’’ সরকারের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার যুক্তি, ট্রাইবুনালে আবেদন করার কথা ওয়াকফ আইনেই বলা রয়েছে।
ওয়াকফ সংশোধনী বিলের পক্ষে লোকসভায় ২৮৮টি ভোট পড়েছিল। বিপক্ষে গিয়েছিল ২৩২টি ভোট। অন্য দিকে রাজ্যসভায় ১২৮ জন সাংসদ এই বিলের পক্ষে ভোট দেন এবং বিপক্ষে ভোট পড়ে ৯৫টি। সংসদের উভয় কক্ষে এই সংশোধিত বিল পাশ হওয়ার পরে গত ৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সম্মতিক্রমে সেটি আইনে পরিণত হয়। তবে সেই সংশোধনী সেই আইন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। বাংলার শাসকদল তৃণমূল জোর দিয়ে বার বার দাবি করে, এ রাজ্যে ওয়াকফ আইন বলবৎ হবে না। তবে বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর সব জেলাশাসককে নির্দেশিকা পাঠিয়ে বলেছে, ওয়াকফ সম্পত্তির বিবরণ কেন্দ্রীয় সরকারের ‘উমিদ’ পোর্টালে নথিভুক্ত করতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদনে হস্তক্ষেপ না-করায় ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সব ওয়াকফ সম্পত্তি নথিভুক্তের কাজ শেষ করতে হবে।