স্মরণ: হাবড়ায় ছবিটি তুলেছেন শান্তনু হালদার
মোমবাতি হাতে অসংখ্য মানুষের মিছিল যশোর রোড ধরে। সকলে কণ্ঠে গাইছেন, ‘‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি’’। কারও হাতে রফিক-সালাম-বরকত-শফিউর-জব্বারদের ছবি। কেউ কবিতা পাঠ করেছেন। কেউ বক্তৃতা করে চলেছেন।
একুশের আগের সন্ধ্যায় ভাষা শহিদদের স্মরণে এভাবেই পথে নেমেছিলেন হাবড়া ও বনগাঁ শহরের সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিককর্মী, শিক্ষক, স্কুলপড়ুয়া, খেলোয়াড়, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এবং অসংখ্য পথচলতি মানুষ। স্থানীয় দেশবন্ধু পার্ক এলাকা থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে শেষ হয়েছিল জয়গাছি সুপার মার্কেটে। সেখানে ভাষা শহিদদের স্মরণে অস্থায়ী বেদি তৈরি করা হয়েছিল। অনেক রাত পর্যন্ত সাধারণ মানুষ সেখানে ফুল দিয়ে শহিদদের শ্রদ্ধা জানান।
কেন এমন আয়োজন? পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘হাবড়ায় বহু উদ্বাস্তু মানুষের বসবাস। ওপার বাংলা থেকে তাঁরা এসেছেন। তাঁদের আবেগের সঙ্গে মিশে আছে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস। তাঁদের সেই পুরনো স্মৃতি উসকে দিতে এবং বাংলা ভাষার মর্যাদারক্ষায় যাঁরা আত্মদান করেছিলেন তাঁদের স্মরণেই এমন আয়োজন।’’
বনগাঁতেও এদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় নীলদর্পণ অডিটোরিয়ামের সামনে থেকে ভাষা শহিদদের স্মরণে মিছিল বের হয়েছিল। শহর পরিক্রমা করে মিছিল শেষ হয় স্থানীয় বিএস ক্যাম্প মোড়ে। সেখানে রয়েছে ভাষা শহিদদের স্মরণে স্থায়ী বেদি। সেখানেও ফুল দিয়ে এবং মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ। স্থানীয় জ্ঞানবিকাশিনী মাঠে সাংস্কৃতিক আনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। রাত বারোটার সময় শহিদ বেদিতে মালা দেন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য। তিনি বলেন, ‘‘ঢাকার আদলে আমরাও গত বছর থেকে একুশের আগের রাত থেকে ভাষা শহিদদের স্মরণে অনুষ্ঠান করছি।’’
আজ, বুধবার পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্তে দু’দেশের মানুষ একসঙ্গে পালন করবেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। আয়োজন করা হয়েছে রক্তদান শিবিরেরও। দু’দেশের মানুষ আবেগে, ভালোবাসায় একাকার হয়ে যাবেন। উপস্থিত থাকবার কথা শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ও জয় গোস্বামীর।