মিলছে না অ্যান্টি র‌্যাবিস ইঞ্জেকশন

ঘ্যাঁক করে এসে কামড়, কুকুরের কামড়ে আতঙ্ক

স্কুল থেকে বই নিয়ে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিল শক্তি দাস।  পথে হঠাৎ একটি কুকুর তার পা কামড়ে ধরে। সাইকেল থেকে রাস্তায় পড়ে যায় শক্তি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাবরা শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৫৪
Share:

বিপজ্জনক: সমঝে চলো। নিজস্ব চিত্র

কুকুরের কামড় খেয়ে আতঙ্কিত হাবরার গ্রাম। এ দিকে, হাসপাতালে অ্যান্টি র‌্যাবিস পর্যাপ্ত নেই।

Advertisement

স্কুল থেকে বই নিয়ে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিল শক্তি দাস। পথে হঠাৎ একটি কুকুর তার পা কামড়ে ধরে। সাইকেল থেকে রাস্তায় পড়ে যায় শক্তি। কোনও মতে গায়ের ধুলো ঝে়ড়ে মাটি থেকে উঠে কুকুরকে লাথি মেরে পালায়।

ঘটনাটি হাবরা থানার জানাপুল এলাকার। শুধু জানাপুল নয়, কয়েক দিন ধরে হাবরার জানাপুল, চোংদা, গণদীপায়ণ, উত্তর হাবরা, বনবনিয়া এলাকায় শুরু হয়েছে কুকুরের তাণ্ডব। ভয়ে কেউ একা বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র সুদীপ রায় হাসপাতালে বসে বলে, ‘‘স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে পাড়ার দোকানে গিয়েছিলাম। হেঁটে বাড়ি ফেরার সময়ে হঠাৎ একটা কুকুর এসে ঘ্যাঁক করে পায়ে কামড়ে দিল।’’

Advertisement

ইতিমধ্যে কুকুরের কামড়ে জখম হয়েছেন প্রায় ৫০ জন। হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালেই কুকুরের কামড়ে খেয়ে হাসপাতালে এসেছেন ২১ জন। তাঁদের মধ্যে বৃদ্ধ, শিশু, মহিলা— সকলেই আছেন।

এ দিকে, হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে অ্যান্টি র‍্যাবিস ভ্যাকসিনের আকাল। অনেককেই বাইরে থেকে বেশি টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন কিনতে হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালে এখন কুকুরে কামড়ালে পরাথমিক চিকি‌ৎসার জন্য আরআইভি দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল সুপার শঙ্করলাল ঘোষ বলেন, ‘‘কুকুর কামড়ানোর পাঁচ দিনের মধ্যে অ্যান্টি র‌্যাবিস ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়ম। এখন হাসপাতালে ওই ভ্যাকসিন নেই।’’ তবে শুক্রবারের মধ্যেই হাসপাতালে ভ্যাকসিন আসবে বলে জানিয়েছেনতিনি।

সোমবার থেকে বনগাঁ শহরের মুস্তাফিপাড়া, দত্তপাড়া, রেটপাড়া, আমলাপাড়া, পশ্চিমপাড়া, বাবাপাড়া-সহ বিভিন্ন এলাকাতেও কুকুরের তাণ্ডব শুরু হয়েছে। সাধারণ মানুষ পথে বের হতে ভয় পাচ্ছেন। কুকুরের কামড়ে জখম আমলাপাড়ার বাসিন্দা যুবক অর্নিবাণ পাল। তিনি মঙ্গলবার সকালে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। বললেন, ‘‘একটি কুকুর এসে প্রথমে পা শুঁকল। তখনও কিছু বুঝিনি। হঠাৎ ডান পায়ের বেশ কিছুটা মাংস এক কামড়ে তুলে নিল। ভয়ঙ্কর ব্যাপার।’’

স্থানীয় মানুষেরা জানালেন, দলবদ্ধ ভাবে যাতায়াত করছেন। হাতে লাঠি নিয়ে হাঁটছেন অনেকে। তবে কোনও কুকুরকে এখনও কেউ বাগে আনতে পারেননি। এলাকার মানুষের দাবি, বন দফতর, পুরসভা বা প্রশাসন কিছু একটা ব্যবস্থা করুক, উঠছে এই দাবি।

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কুকুর ধরা তাদের কাজের মধ্যে পড়ে না। হাবরার পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘কুকুর ধরতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। বন দফতরের সাহায্যও নেওয়া হচ্ছে।’’

কেন এক সঙ্গে এমন আক্রমণাত্মক হয়ে উঠল একাধিক কুকুর? কুকুর নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনের প্রতিনিধিরা জানালেন, এই সময়ে মা কুকুরগুলি ভীষণ উত্তেজিত থাকে। কারণ, শীতে ও দুর্ঘটনায় তাদের বাচ্চা মারা যাচ্ছে। সে কারণে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন