বিপন্ন: বোর্ড লাগানো। তবু চলছে ভারী যানবাহন। বিবেকানন্দ সেতুতে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
সেতুতে ওঠার মুখে লাগানো বোর্ড। তাতে লেখা, ‘ভারী গাড়ি চালানো যাবে না।’
কিন্তু লিখলেই প়ড়ছে কে, আর পড়লেই মানছে কে! তাই সব রকম গাড়িই চলছে সেতুর উপর দিয়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বোর্ড লাগিয়েই প্রশাসন দায় সেরেছে। কোনও নজরদারি নেই। কুলতলির জামতলা বাজারের কাছে সেতুটি নিয়ে তাই আতঙ্কে ভুগছেন সাধারণ মানুষ।
জামতলা বাজারের কাছে, নেমানিয়া নদীর উপরে প্রায় ১০০ মিটার লম্বা এই সেতু। পোশাকি নাম ‘বিবেকানন্দ সেতু।’ ১৯৯৮ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয় সেতুর। ২০০৩ সালে সেতুটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। জামতলা বাজার পেরিয়ে কুলতলি থানা-সহ কৈখালি, কুন্দখালি, গোপালগঞ্জের মতো বহু গ্রামে যাতায়াতের একমাত্র পথ ওই সেতু। স্থানীয় মানুষের কথা অনুযায়ী রোজ প্রায় হাজার পাঁচেক মানুষ যাতায়াত করে এখান দিয়ে। মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরে এই সেতু নিয়েও আতঙ্কিত মানুষজন। অভিযোগ, সেতুতে ওঠার মুখে ভারী গাড়ি চলাচলের নিষেধাজ্ঞা বার্তা ঝোলানো সত্ত্বেও অবাধে বড় গাড়ি যাতায়াত করে। স্থানীয় দোকানদার সুমাধব মণ্ডল বলেন, ‘‘দশ-বারো, এমনকী চোদ্দো চাকার ট্রাকও যায় সেতু দিয়ে। বড় গাড়ি গেলে সেতু রীতিমতো কাঁপে।’’
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অনেকে জানালেন, রাস্তা বা অন্য কাজের জন্য ইমারতি দ্রব্য-ভর্তি গাড়ি নিয়মিত চলাচল করে সেতু দিয়ে। তা ছাড়াও, কৈখালিতে নদীর ধারে কলকাতা বা রাজ্যের অন্য জায়গা থেকে অনেকে বেড়াতে আসেন। পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, গত বছর সেতু সংস্কারের কাজ হয়। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও রকম ‘ফিজিক্যাল অডিট’ হয়নি। কুলতলি ব্লক তৃণমূল সভাপতি গোপাল মাঝি বলেন, ‘‘সেতুটির পরিস্থিতি খারাপ। মাঝখানে আরও খারাপ হয়েছিল। বেশ কিছু দিন আগে সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদকে দিয়ে প্রাথমিক কিছু সংস্কারের কাজ করানো হয়েছে। কিন্তু আরও সংস্কার প্রয়োজন। যে কোনও মুহূর্তে বিপদ হতে পারে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে। বড় গাড়ি চলাচলেও নিয়ন্ত্রণ আনা জরুরি।’’