আইন রক্ষায় উদ্যোগ উত্তর ২৪ পরগনায়

থানা অভিযোগ নিচ্ছে না, বাড়ি পৌঁছে যাবে পুলিশ

অভিযোগ জানাতে এত দিন ছুটতে হতো থানায়। এ বার অভিযোগ জানতে ঘরে ছুটে যাবে পুলিশ! থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে সমস্যা হচ্ছে? পুলিশ অভিযোগ নিচ্ছে না? এফআইআর না করে জেনারেল ডায়েরি নিতে চাইছে?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বারাসত শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৬ ০৮:০০
Share:

অভিযোগ জানাতে এত দিন ছুটতে হতো থানায়। এ বার অভিযোগ জানতে ঘরে ছুটে যাবে পুলিশ!

Advertisement

থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে সমস্যা হচ্ছে? পুলিশ অভিযোগ নিচ্ছে না? এফআইআর না করে জেনারেল ডায়েরি নিতে চাইছে?

এমন সব সমস্যা এড়াতে উপায় বের করেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ। দু’টি বিশেষ নম্বরে ‘জরুরি পরিষেবা’ চালু করেছে তারা। ওই নম্বরে ফোন করলে সঙ্গে সঙ্গে জেলার যে কোনও প্রান্তে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ বাড়ি গিয়ে অভিযোগ নথিভুক্ত করে আসবে।

Advertisement

সোমবার বারাসতে জেলা পুলিশ কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই নম্বরে ফোন করলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কর্মীরা সংশ্লিষ্ট থানাকে জানাবে। পুলিশ বাড়ি গিয়ে অভিযোগ নিয়ে আসবে। অভিযোগ জানাতে থানায় আসার প্রয়োজন পড়বে না।’’

বস্তুত, গত কয়েক বছরে কলকাতা-সংলগ্ন উত্তর ২৪ পরগনা ক্রমশই ঘটনাবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। কলকাতার বেশ কিছুটা অংশ এই জেলার মধ্যে হওয়ায় গুরুত্ব বেড়েছে আরও।

গত বিধানসভায় তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরেই এই এই জেলার পুলিশকে তিন ভাগে ভাগ করে দেওয়া হয়। বিধাননগর ও ব্যারাকপুর কমিশনারেট ছাড়াও জেলা পুলিশের মধ্যে পড়ে ২৩টি থানা। যার মধ্যে বারাসত ও বনগাঁয় একটি করে মহিলা পুলিশ থানাও রয়েছে। তারপরেও বারাসত থানা এলাকায় একের পর মহিলা নির্যাতনের ঘটনা ঘটতে থাকে। রাজীব হত্যাকাণ্ড, কামদুনি গণধর্ষণ, মধ্যমগ্রামে নাবালিকা ধর্ষণের মতো ঘটনার পরে বারাসত থানাকে ভেঙে বারাসত, মধ্যমগ্রাম, শাসন এবং দত্তপুকুর— চারটি থানা করা হয়। তারপরে এলাকায় অপরাধ প্রবণতা অনেকটা কমেছে বলে স্থানীয় মানুষের অভিজ্ঞতা।

ভাস্করবাবু এ দিন বলেন, ‘‘এই জেলার গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে অপরাধের ঘটনা কমানোর জন্যই জরুরি এমন কিছু পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, অনেক সময়ে অনেক পরিষেবার কথা সাধারণ মানুষ জানতেই পারেন না। সে কারণে এই নম্বর এবং আপৎকালীন ক্ষেত্রে কী কী করণীয় তা ফেক্স, পোস্টারের মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে লাগিয়ে দেওয়া হবে।

কেন এমন উদ্যোগ?

আগের কয়েকটি উদ্যোগে সাফল্য আসার পরেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জেলা পুলিশ সূত্রের খবর। বারাসত, মধ্যমগ্রামে মহিলা নির্যাতনের ঘটনা রুখতে বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রী ও শিক্ষিকাদের নিয়ে বৈঠক করে স্কুলে স্কুলে অফিসারদের মোবাইল নম্বর দিয়ে দেয় পুলিশ।

কালীপুজোর সময়ে রোমিওদের ধরতে সাধারণ পোশাকে মহিলা পুলিশ মোতায়েন হয়। হাবরায় লাগাতার চুরি রুখতে বাড়ি ফাঁকা রেখে ছুটিতে গেলে পুলিশে খবর দিয়ে রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। দুর্গাপুজোর সময়ে ভিড়ে বাইক বাহিনীর দাপট রুখতে বনগাঁয় বাইকের চাবি থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। বাইক ঠেলে বাড়ি নিয়ে গিয়ে পুজোর পরে থানা থেকে চাবি ফেরত মেলে।

পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘এমন সব উদ্যোগে বেশ সাফল্য মিলেছে। সে কারণেই অপরাধ দমন এবং সাধারণ মানুষের কাছে আরও বেশি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্যই এ রকম উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’’

দুই চোলাই কারবারি ধৃত। রবিবার গভীর রাতে হাবরা থানার পুলিশ স্থানীয় হাবরা বাজার এলাকা থেকে ৭০ লিটার চোলাই-সহ দুই কারবারিকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম সুনীল মণ্ডল ও শঙ্কর অধিকারী। তাদের বাড়ি স্থানীয় কামারথুবা ও আশুতোষ কলোনি এলাকায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন