আতঙ্ক: এ ভাবেই গিয়েছে তার — নিজস্ব চিত্র
স্কুলের ভিতর ক্লাস চলছে। এ দিকে, স্কুলের মাথার উপর দিয়ে গিয়েছে বিদ্যুতের হাইটেনশন তার।
এই নিয়ে আতঙ্কে শিক্ষক- অভিভাবকেরা। অনেকেই ছোটদের স্কুলে পাঠাতে চাইছেন না বলে দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের। এ ভাবে দিন দিন ক্যানিং ২ ব্লকের কালিকাতলা নতুন অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের সংখ্যাও কমছে বলে অভিযোগ। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ। অভিভাবকেরা আবার জানালেন, তার সরাতে একাধিকবার স্কুল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনুপকুমার ঘোষাল বলেন, ‘‘আমি এই স্কুলের দায়িত্ব নেওয়ার আগে স্কুলের উপর দিয়ে ওই তার নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বারবার বিদ্যুৎ দফতরকে জানিয়েছি, স্কুলের উপর থেকে তার সরানোর জন্য। কিন্তু কোনও কাজ হচ্ছে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ দফতর বলছে তার সরানোর জন্য স্কুলকে খরচ বহন করতে হবে। যে টাকা তারা দাবি করছে, সেটা স্কুলের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। স্কুলের তেমন ফান্ড নেই।’’
স্থানীয় বাসিন্দা আমির আলি মোল্লা জানান, বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে নিশ্চিন্তে থাকা যায় না। কখন যে কী অঘটন ঘটে যায়, সেই ভয় হয়। বাচ্চারা খেলতে খেলতে অনেক সময়ে স্কুলের ছাদে চলে যায়। কোনও ভাবে বিপদ ঘটে যেতে পারে।
স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা এই মুহূর্তে ৪৯২ জন। শিক্ষক ১৪ জন। ক্যানিং সার্কেলের অন্যতম বড় স্কুল এটি। সম্প্রতি স্কুলে এসিআরের টাকায় দু’টি শ্রেণিকক্ষ তৈরি হয়েছে দোতলায়। বিদ্যুতের তারের জন্য আর ক্লাসরুম বাড়ানো যাচ্ছে না। মাঝেমধ্যে শিক্ষকদের চোখ এড়িয়ে ছাদে উঠে পড়ছে ছাত্র-ছাত্রীরা। প্রধান শিক্ষককে স্কুলের অর্ধেক সময়ে নিজের কাজ বন্ধ করে সিঁড়ির মুখে বসে থাকেন বলেও জানালেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এলাকার বিধায়ক সওকত মোল্লা বলেন, ‘‘এটা সত্যিই খুব সমস্যার। যে ভাবে স্কুলের উপর দিয়ে বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাতে অনেকে আতঙ্কিত। বিদ্যুৎ দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি, যাতে স্কুলের উপর থেকে বিদ্যুতের তার সরানোর ব্যবস্থা করা হয়।’’
মহকুমা বিদ্যুৎ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদেরও নজরে এসেছে। স্কুলের উপর থেকে যাতে ওই তার সরানো যায়, তা নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সেই মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’