—প্রতীকী ছবি
রান্নার গ্যাস মজুত ও বিক্রির বেআইনি কারবার চলছিল রমরমিয়ে। খবর পেয়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ (ডিইবি) ও গাইঘাটার পুলিশ ঠাকুরনগরের বাবুপাড়ায় ওই গোডাউনে হানা দেয়। ২২টি রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার, ওভেন উদ্ধার করা হয়েছে। গোডাউন সিল করা হয়েছে। রমেশ চন্দ্র অধিকারী নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। কারবারে যুক্ত অহীন অধিকারী ও বিকাশ বিশ্বাস নামে দু’জনকে খুঁজছে পুলিশ।
ডিইবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘ইন্ডিয়ান গ্যাস সার্ভিস সেন্টার’ নামে একটি ব্যানার লাগানো রয়েছে ওই দোকান তথা গোডাউনে। আরও লেখা, ‘এখানে এক দিনে গ্যাসের নতুন কানেকশন দেওয়া হয়। গ্যাস ও ওভেন ভাড়া দেওয়া হয়।’ এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, ‘‘সরকারি ভাবে কোথাও একদিনে গ্যাসের লাইন পাওয়া সম্ভব নয়। গোটাটাই বেআইনি কারবার।’’
তদন্তে নেমে ডিইবি কর্তারা জানতে পেরেছেন, এখান থেকে ঠাকুরনগর ও সংলগ্ন এলাকার, মিষ্টির দোকান, হোটেল, রেস্তোঁরায় ওই সার্ভিস সেন্টার থেকে বেআইনি ভাবে রান্নার গ্যাস সরবরাহ করা হত। সিলিন্ডার প্রতি ৮০০ টাকা নেওয়া হয়। এলাকার বাসিন্দারাও অনেকে এখান থেকে গ্যাস কেনেন। কিন্তু গোটা কারবার যে বেআইনি, তা নিয়ে অনেকের কোনও ধারণাই নেই। অনেকে সার্ভিস সেন্টার থেকে সিলিন্ডার নিয়ে ৫ কেজি গ্যাস ভরে আনতেন। এ ভাবে সিলিন্ডারে গ্যাস ভরে দেওয়াও বেআইনি বলে জানিয়েছে পুলিশ। কোথা থেকে রান্নার গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডার আনা হত, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
প্রাথমিক ভাবে ডিইবি অফিসারেরা জানতে পেরেছেন, সরকারি ‘উজ্জ্বলা’ প্রকল্পের গ্যাস এখানে মজুত করে বিক্রি করা হত। এক অফিসার বলেন, ‘‘যাঁরা বিপিএল তালিকাভুক্ত তাঁরাই ওই প্রকল্পে গ্যাস পান। ওই গ্যাসের সিলিন্ডার যারা বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয়, তাদের সঙ্গে এই কারবারিদের যোগাযোগ রয়েছে। তাদের মাধ্যমে গোডাইনে গ্যাস সিলিন্ডার পৌঁছায়।’’
কিন্তু কী ভাবে?
ডিইবি সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্দিষ্ট দিনে গ্রাহককে গ্যাস সরবরাহ না করে গোডাউন কর্তৃপক্ষের কাছে বিক্রি দেওয়া হয়। পরে অন্য গ্রাহকের গ্যাস আগের গ্রাহককে দেওয়া হয়। এ ভাবে চলতে থাকে প্রক্রিয়া। তা ছাড়া, গ্যাসের কানেকশন থাকলেও অনেকে গ্যাস নেন না, তাঁদের নামেও গ্যাস তুলে নিয়ে এখানে বিক্রি করা হত।