ধৃত: দুই ট্রাক-চোর। —নিজস্ব চিত্র।
এ যেন নতুন বোতলে পুরনো মদ।
বনগাঁয় একটি ট্রাক চুরি ও পাচার চক্রের হদিস পেয়ে তেমনটাই বক্তব্য পুলিশের।
১৭ জুলাই রাতে বনগাঁ থানার পুলিশ ডাকাতির উদ্দেশ্যে জড়ো হওয়ার অভিযোগে দুই দুষ্কৃতীকে গোপালনগর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের নাম আরাফত আলি মণ্ডল ও অমৃতলাল মজুমদার। পুলিশ জানতে পেরেছে, ধৃতেরা ট্রাক চুরি ও পাচারের কাজে জড়িত।
পুলিশের দাবি, চক্রটির কাজ আর পাঁচটা ট্রাক চুরির চক্রের থেকে আলাদা। কী রকম?
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, চক্রের সদস্যেরা ট্রাক চুরি করতে যাওয়ার আগে সঙ্গে করে আলাদা একটি ট্রাকের নম্বর লেখা প্লেট নিয়ে যায়। সেই ট্রাক নম্বরের বৈধ নথিপত্রও তাদের কাছে থাকে। সড়কের উপর থেকে বা কোনও গ্যারাজের সামনে থেকে ট্রাক চুরি করে তারা প্রথমেই চুরি করা ট্রাক থেকে নম্বর প্লেট খুলে ফেলে। সেখানে নিজেদের কাছে থাকা নম্বর প্লেটটি লাগিয়ে দেয়। ফলে রাস্তায় যাতায়াত অনেক সহজ হয়ে যায়। পুলিশ কোনও কারণে ধরলে তারা সহজেই সেই নম্বরের বৈধ নথিপত্র দেখিয়ে দেয়। রাস্তাঘাটে দাঁড়িয়ে যে ধরনের তল্লাশি চলে, তাতে পুলিশ সাধারণত ইঞ্জিন বা চেসিসের নম্বর মিলিয়ে দেখে না। ফলে সহজেই চক্রটি পুলিশের চোখে ধুলো দিতে পারে।
পুলিশ জানিয়েছে, ট্রাক চুরি করে আনার পরে তারা গোপালনগরের একটি গাড়ির গ্যারেজে রঙ বদলে ফেলত। নতুন নম্বর ও নথিপত্র দেখিয়ে সেই ট্রাক বিক্রি হয়ে যেত চড়া দামে। যিনি ট্রাকটি বৈধ ভাবে কিনছেন, পরবর্তী সময়ে তিনি প্রতারিত হতে পারেন। নতুন নম্বর ও নথি কী ভাবে সংগ্রহ করা হত, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
তিন দিন পুলিশি হেফাজতে থাকার পরে পুলিশ শনিবার ফের ধৃতদের আদালতে পাঠিয়েছে। পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন তাদের জেরা করে চাঁপাবেড়িয়া থেকে ৬ লিটার তরল মাদকও উদ্ধার করা হয়েছিল।