International Women's Day

সহপাঠিনীদের পাশে থেকে রান্নার দায়িত্বে ছাত্রেরাও  

আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আগে, শনিবার স্কুলে দিনটি উদযাপিত হল। স্কুলে রান্না-উৎসব হয়েছে এ দিন।

Advertisement

নবেন্দু ঘোষ

হিঙ্গলগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২০ ০২:১৫
Share:

রান্না-উৎসব: কনকনগর এসডি ইন্সটিটিউশনে। নিজস্ব চিত্র

হাঁড়ি-হেঁসেল সামলানো মেয়েদের একচেটিয়া দায়িত্ব, এ কথা মানেন না নতুন প্রজন্মের বহু পুরুষও। সেই বার্তা ছড়িয়ে দিতেই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ করল হিঙ্গলগঞ্জের কনকনগর এসডি ইন্সটিটিউশন। অনুষ্ঠানে হাজির ছিল কলকাতার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

Advertisement

আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আগে, শনিবার স্কুলে দিনটি উদযাপিত হল। স্কুলে রান্না-উৎসব হয়েছে এ দিন। দশম ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রীদের পাশাপাশি ছাত্রেরাও তাতে হাত লাগায়। কোনও শিক্ষিকার বদলে স্কুলের বাংলার শিক্ষক দীপেন্দ্রনাথ মণ্ডলকেই হেঁসেলের তদারকি করতে দেখা গেল।

অনুষ্ঠানে স্কুলের প্রাক্তনী সুদেষ্ণা বাউলিয়া, সঞ্চয়িতা মণ্ডলদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। প্রধান শিক্ষক পুলক রায়চৌধুরী ওই দুই তরুণীর জীবনের কথা তুলে ধরেন সকলের সামনে। জানান, কী ভাবে প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে স্বনির্ভর হয়ে ওঠার জেদ ধরে রেখেছিলেন সুদেষ্ণা-সঞ্চয়িতারা। স্কুলের তরফে তাঁদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

Advertisement

এ দিন একাদশ শ্রেণির ছাত্রী পায়েল মণ্ডল, জুঁই মণ্ডলরা যেমন রান্না করেছে, তেমনই তাদের সহপাঠী অনীক চক্রবর্তী, রাজু মণ্ডলরাও মাশরুমের তরকারি তৈরি করে খাইয়েছে। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক জানান, ঘর সামলানো, রান্না করার মতো কিছু কাজ শুধুমাত্র মেয়েদের দায়িত্ব—এই বদ্ধমূল ধারণা মুছে ফেলতে চাই। ছাত্রছাত্রীদের কাছে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা হল, যে কোনও ভাল কাজ নারী-পুরুষ সকলে মিলে করতে পারে।

অনীক, রাজুরা বলে, ‘‘সহপাঠিনীদের পাশাপাশি আমরাও রান্না করলাম। খুব আনন্দ হয়েছে। আমরা বুঝলাম, খাবার তৈরি করাটা কোনও অবহেলার কাজ নয়। এতে অনেক যত্ন আর পরিশ্রম মিশে থাকে।’’

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির পক্ষে ডিজিটাল স্বাধীনতায় লিঙ্গ বৈষম্যের দিকটি আলোচনায় তুলে ধরে। ডিজিটাল দুনিয়ায় কী ভাবে নারীদের বিড়ম্বনায় ফেলা হয়, অসম্মানিত করা হয়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ‘আবলতাবল নয়’— এই নামে একটি ছড়ার বই প্রকাশ হয়েছে ছাত্রছাত্রীদের হাত দিয়ে। সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন পরিচিত শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে ছড়ায়।

স্কুলের দেওয়াল জুড়ে বিশিষ্ট কয়েকজন ভারতীয় নারীর ছবি-সহ তাঁদের সংক্ষেপে জীবনকাহিনী তুলে ধরা হয়েছিল। সেই তালিকায় ছিলেন মেরি কম, পিঙ্কি প্রামাণিক, মিতালি রাজের মতো ব্যক্তিত্বেরা।

করোনাভাইরাস নিয়েও ছেলেমেয়েদের সচেতন করা হয়েছে। পুলক বলেন, ‘‘এই সমাজকে ছোটবেলা থেকেই সংবেদনশীল, সচেতন করে তুলতে হবে। এই পৃথিবী সমতার পৃথিবীর। নারী-পুরুষ, দুর্বল-সবল সকলের জন্য। সে কথা তুলে ধরার জন্য নারীদিবস পালন নিছক এক অজুহাত মাত্র।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন