ঘর তছনছ, প্রৌঢ়কে খুন করে সর্বস্ব লুট

নিজের ঘর থেকে উদ্ধার হয় কমল দাস (৫৭) নামে ওই প্রৌঢ়ের গলাকাটা দেহ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৯ ০০:৪৭
Share:

কমল দাস।

রোজ রাতে কাজে যাওয়ার আগে কাকিমার সঙ্গে দেখা করে যাওয়ার অভ্যাস ছিল তাঁর। বুধবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ কাকিমা শিবানী দাসের খেয়াল হয়, ভাইপো তাঁর সঙ্গে দেখা করে যাননি। আত্মীয়দের মাধ্যমে খোঁজ শুরু হয়। ঘণ্টাখানেক পরে নিজের ঘর থেকে উদ্ধার হয় কমল দাস (৫৭) নামে ওই প্রৌঢ়ের গলাকাটা দেহ। ব্যারাকপুর মণিরামপুরের বাড়িতে একাই থাকতেন কমলবাবু।

Advertisement

কমলবাবুর ঘরে তিনটি মদের গ্লাস পেয়েছে পুলিশ। সব আসবাব তছনছ করা ছিল। উধাও মূল্যবান জিনিসপত্র। পুলিশের অনুমান, পরিচিত কেউ কমলবাবুকে খুন করেছে। মঙ্গলবার রাতে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশের ধারণা। তবে জিনিসপত্র সরানো ছাড়া খুনের আর কোনও উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা দেখা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।

স্থানীয় সূত্রের খবর, টিটাগড়ে একটি চটকলে কাজ করতেন কমলবাবু। তাঁরা চার ভাই সকলে আলাদা থাকেন। অকৃতদার কমলবাবু মণিরামপুরের গোয়ালাপাড়ায় একটি একতলা বাড়িতে থাকতেন। পাড়ার দোকান থেকে তাঁর খাবার আসত। তবে আত্মীয়দের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল কমলবাবুর।

Advertisement

ওই প্রৌঢ়ের আত্মীয়, উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান-পারিষদ অভিজিৎ মজুমদার জানান, চলতি সপ্তাহে কমলবাবুর নাইট ডিউটি চলছিল। রাত ৯টা নাগাদ ডিউটিতে যাওয়ার আগে বরাবরই তিনি শিবানীদেবীর সঙ্গে দেখা করে যেতেন। বাড়ি ফিরতেন ভোরে। মঙ্গলবারও তিনি শিবানীদেবীর সঙ্গে দেখা করে গিয়েছিলেন।

বুধবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ শিবানীদেবীর খেয়াল হয়, কমলবাবু তাঁর সঙ্গে দেখা করে যাননি। তিনি বলেন, ‘‘সঙ্গে সঙ্গে আমি ওঁর মোবাইলে ফোন করি। দেখি, দু’টো মোবাইলই বন্ধ। তখন আমি অন্য ভাইপোদের খোঁজ নিতে বলি।’’ কমলবাবুর কয়েক জন আত্মীয় গিয়ে দেখেন, তাঁর বাড়ির সদর দরজা ভিতর থেকে তালাবন্ধ। ঘরে ঢোকার কোল্যাপসিব্‌ল গেট টানা।

খবর পেয়ে অভিজিৎবাবু গিয়ে তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন। তিনি বলেন, ‘‘ঢুকে দেখি, পুরো ঘর তছনছ। আলমারি এবং অন্য আসবাব ভাঙা। ঘরে ওঁর কোনও জিনিসই নেই। একটি টেবিলে তিনটি মদের গ্লাস রাখা ছিল। প্রথমে কমলবাবুকে কোথাও খুঁজে পাইনি। পরে বাড়ির পিছনে গিয়ে দেখি, উনি উপুড় হয়ে পড়ে আছেন। চারদিকে জমাট বাঁধা রক্ত।’’ আত্মীয়েরা জানিয়েছেন, কমলবাবুর বেশ কিছু সোনার গয়না ছিল। সেগুলি খোয়া গিয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই প্রৌঢ়ের গলায় দু’ইঞ্চি গভীর ক্ষত ছিল। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (‌জোন ১) কে কান্নন বলেন, ‘‘পরিচিত কেউ খুন করেছে বলেই মনে হচ্ছে। জিনিসপত্রও চুরি গিয়েছে।’’

প্রশ্ন উঠছে, মঙ্গলবার রাতেই যদি কমলবাবু খুন হন, তা হলে তিনি কি ডিউটিতে যাননি? পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। আত্মীয়েরা জানিয়েছেন, কমলবাবুর কয়েক জন সহকর্মী মাঝেমধ্যেই রাতে তাঁর বাড়িতে আসতেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন