প্রতীক্ষা: চলছে উদ্বোধনের প্রস্তুতি। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। অবশেষে আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু হতে চলেছে কলকাতা- খুলনা ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ ট্রেনের।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ কলকাতা স্টেশন থেকে ট্রেনটি খুলনার দিকে রওনা দেবে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যাত্রার সূচনা করবেন দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী। কলকাতা থেকে যাত্রা শুরু করে ট্রেনটি পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ও পার বাংলার মাটিতে ঢুকবে বেলা ১টা নাগাদ। ওই দিনই ট্রেনটি ফিরেও আসবে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা থেকে খুলনা পর্যন্ত ট্রেনটি অতিক্রম করবে ১৭২ কিলোমিটার। এর মধ্যে ভারতে পড়ছে ৯৫ কিলোমিটার। সময় লাগবে প্রায় ৪ ঘণ্টা। পেট্রাপোল স্টেশনে যাত্রীদের পাসপোর্ট-ভিসা পরীক্ষা করা হবে। তবে বৃহস্পতিবার ওই ট্রেন যাত্রার আনুষ্ঠানিক সূচনা হলেও নিয়মিত ভাবে যাত্রী নিয়ে যাতায়াত শুরু হবে ১৬ নভেম্বর থেকে। বৃহস্পতিবার এ দেশ থেকে ট্রেনে সাধারণ যাত্রীরা কেউ যাচ্ছেন না। সরকারি প্রতিনিধিরাই শুধু থাকবেন।
বুধবার দুপুরে পেট্রাপোল স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল, স্টেশনের পরিকাঠামো তৈরির কাজ শেষ। তৈরি হয়েছে, অভিবাসন কাউন্টার, শুল্ক দফতরের অফিস, বুকিং অফিস, জিআরপি অফিস ও যাত্রীদের বিশ্রামের জন্য বিশাল একটি ঘর। প্ল্যাটফর্মে রয়েছে শৌচাগার, পানীয় জলের ব্যবস্থা। ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে। আলোর ব্যবস্থাও ভাল। এ দিন জনশূন্য স্টেশনে দেখা গেল রেলকর্মীরা লাইন পরীক্ষা করছেন।
রেল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’দেশের মধ্যে ওই ট্রেন চলাচলের পরীক্ষামূলক উদ্বোধন হয়েছিল চলতি বছরের এপ্রিল মাসে। সে সময়ে ও দেশ থেকে ট্রেনটি এসেছিল কলকাতায়। অতীতে খুলনা থেকে শিয়ালদহের মধ্যে যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচল করলেও ষাটের দশকে তা বন্ধ হয়ে যায়। এ পার বাংলার বহু প্রবীণ মানুষের জন্ম বা শৈশব কেটেছে অধুনা বাংলাদেশে। খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল, যশোর, পটুখালিতে থাকার সময়ে তাঁরা ওই ট্রেনেই এ দেশে এসেছেন।
অনেকেই বাবা-মায়ের হাত ধরে শেষবারের মতো এ দেশে এসে পাকাপাকি ভাবে বসবাস শুরু করেছেন ওই ট্রেনে চেপেই।শৈশবের স্মৃতি ভুলতে পারেননি ও পার বাংলা ছেড়ে আসা বহু মানুষ। ফের খুলনা-শিয়ালদহ যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচলের খবর পেয়ে তাঁদের সকলের স্মৃতি উসকে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার ট্রেন দেখতে স্টেশনে আসবেন বলে জানালেন অনেকেই। আগের বারও পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের দিন বহু মানুষ পেট্রাপোল স্টেশনে ভিড় করেছিলেন।