চোখের জলে মাসুদুরকে শেষ বিদায় জানাল গ্রাম

সাদা কাপড়ে আপাদমস্তক ঢাকা অবস্থায় যখন শেষ বারের মতো বাড়িতে এলেন মাসুদুর রহমান বৈদ্য, তখন থিকথিকে ভিড় চারপাশে। প্রতিবন্ধকতাকে হেলায় হারিয়ে ইংলিশ চ্যানেল জয়ী সাঁতারুকে শেষ বারের জন্য সেই ভিড়ে আট থেকে আশি সবাই হাজির। তাঁদের চোখে জল। এত অল্প বয়সে তাঁর চলে যাওয়া যেন মানতে পারছিলেন না তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দেগঙ্গা শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ০১:১৩
Share:

শেষযাত্রায় সামিল হলেন বহু মানুষ। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।

সাদা কাপড়ে আপাদমস্তক ঢাকা অবস্থায় যখন শেষ বারের মতো বাড়িতে এলেন মাসুদুর রহমান বৈদ্য, তখন থিকথিকে ভিড় চারপাশে। প্রতিবন্ধকতাকে হেলায় হারিয়ে ইংলিশ চ্যানেল জয়ী সাঁতারুকে শেষ বারের জন্য সেই ভিড়ে আট থেকে আশি সবাই হাজির। তাঁদের চোখে জল। এত অল্প বয়সে তাঁর চলে যাওয়া যেন মানতে পারছিলেন না তাঁরা।

Advertisement

সাত ভাইবোনের মধ্যে মাসুদুর বড়। তিনি কলকাতার তপসিয়ায় থাকতেন। রক্ত শূন্যতায় ভুগছিলেন। রবিবার অসুস্থ হয়ে পড়ায় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। দুপুরে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। সোমবার সকালেই খবর ছড়িয়ে গিয়েছিল, দেগঙ্গার চাকলা পঞ্চায়েতের বল্লভপুর গ্রামে আনা হবে মাসুদুরের মরদেহ। ফলে ওই গ্রাম তো বটেই, আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রাম থেকেও কয়েক হাজার মানুষ পৌঁছে গিয়েছিলেন মাসুদুরের বাড়ির সামনে। দুপুর সওয়া ২টো নাগাদ শববাহী গাড়ি গ্রামে ঢুকতেই কান্নার রোল পড়ে যায়। মা ফতেমা বেওয়া আক্ষেপ করছিলেন, ‘‘এত কম বয়সে যে আমাদের ফাঁকি দিয়ে ও চলে গেল, ভাবতেই পারছি না।’’ কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞান হারাচ্ছিলেন সাঁতারুর স্ত্রী সালমা রহমান বৈদ্য। গ্রামবাসীরা তাঁকে এবং ছোট ছোট দুই মেয়েকে স্বান্তনা দিচ্ছিলেন। সালিমা বলছিলেন, ‘‘স্বামী বলতেন, উনি মারা গেলে যেন বাবার সমাধির পাশে কবর দেওয়া হয়। ওর সেই ইচ্ছা পূরণ করা হল।’’

শেষ বারের মতো মাসুদুরকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মফিদুল হক সাহাজি থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা সিপিএম নেত্রী নিলু মোস্তারি খানম, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়রা। প্রয়াত সাঁতারুর পরিজনদের সমবেদনা জানান তাঁরা। সালিমা বলেন, ‘‘স্বামীর মৃত্যুর পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আমার সঙ্গে কথা বলেন। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ও এই সময়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ওঁদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’’ বিকেল তিনটে নাগাদ বাবার কবরের পাশে কবরস্থ করা হয় মাসুদুরের দেহ।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন