বিবাহিত এক মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগে তিন যুবককে আমৃত্যু কারাবাসের নির্দেশ দিলেন বিচারক।
পুলিশ জানায়, বসিরহাটের সর্দারহাটি গ্রামের ওই তিন যুবকের নাম মোকলেসুর রহমান মণ্ডল ওরফে পুপাই, রেজাউল মণ্ডল এবং সামসেদ আলি সর্দার ওরফে বুড়ো। সরকার পক্ষের আইনজীবী গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বসিরহাটের ফাস্ট ট্র্যাক-১ আদালতের বিচারক অমিত চট্টোপাধ্যায় তাঁর রায়ে তিনজনকে গত ১৬ জুলাই দোষী সাব্যস্ত করেন। মঙ্গলবার ওই তিনজনের সাজা হিসাবে আমৃত্যু কারাবাসের নির্দেশ দেন।’’
ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ বসিরহাটের সর্দারহাটিতে এক বিবাহিত মহিলার বাড়িতে হামলা চালায় মোকলেসুর, রেজাউল এবং সামসেদ। পুলিশ জানায়, মহিলার স্বামী প্রতিবন্ধী। তাঁর ভ্যান রিকশায় লাঠির ঘা মারা হয়। তা শুনে বাইরে বেরিয়ে প্রতিবাদ করেন মহিলার স্বামী ও ছেলে।
তিন যুবক তখন বাবা-ছেলেকে মারধর করে। তা দেখে মহিলা প্রতিবাদে সোচ্চার হলে তিন যুবক মহিলার উপরেও চড়াও হয়। তাঁকে টেনে স্থানীয় একটি প্রাথমিক স্কুলের মাঠে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয়। ঘটনার কথা কাউকে বললে বোমা মেরে বাড়ি উড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
মহিলা ঘরে ফিরে স্বামীকে সব জানান। পর দিন তাঁরা থানায় গিয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। সেই থেকে ওই তিন যুবক জেলে ছিল। সেখানেই তাদের ট্রায়াল হয়।
পুলিশ জানায়, ঘটনার পরে অভিযুক্তদের পরিবার-পরিজনেরা অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য নানা ভাবে হুমকি দিতে থাকে। আতঙ্কিত পরিবারটি জমি-বাড়ি জলের দরে বেচে অন্যত্র চলে যান।
অপরাধীদের চরম শাস্তির দাবিতে ধর্ষিতা মহিলা রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব থেকে শুরু করে জেলা পুলিশ সুপার এবং মহকুমাশাসক, এসডিপিও-র দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
এ দিন বিচারকের আদেশ শোনার পরে কান্নায় ভেঙে পড়েন দোষীদের আত্মীয়েরা। তাঁরা দাবি করেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে সাজা হল। তাঁরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন।