হাসপাতাল নিয়ে ঘোষণা নেই মুখ্যমন্ত্রীর, হতাশ গোবরডাঙা

গোবরডাঙা পৌর উন্নয়ন পরিষদ দীর্ঘ দিন ধরেই গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গ ভাবে চালুর দাবিতে আন্দোলন করছে। সংগঠনের সহ সভাপতি পবিত্র মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা আশা করেছিলাম, এ বার হয় তো মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতাল চালুর বিষয়ে সদর্থক কোনও বার্তা দেবেন। টিভির পর্দায় চোখ রেখেছিলাম। কিন্তু হতাশ হলাম।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোবরডাঙা  শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৯ ০০:৪০
Share:

শূন্য হাসপাতাল চত্বর। গোবরডাঙা। —নিজস্ব চিত্র

মুখ্যমন্ত্রী এসেছিলেন জেলায়। ফের আশায় বুক বেঁধেছিলেন গোবরডাঙার মানুষ। কিন্তু এ বারও হতাশ তাঁরা। হাসপাতাল নিয়ে কোনও ঘোষণা নেই মুখ্যমন্ত্রীর মুখে।

Advertisement

শুক্রবার সকাল থেকে শহরবাসীর যাবতীয় আগ্রহের বিষয় ছিল মধ্যমগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠক। তাঁরা আশা করেছিলেন, লোকসভা ভোটে গোবরডাঙায় শাসকদলের হতাশাজনক ফলের পরে এ বার হয় তো হাসপাতাল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কোনও বার্তা দেবেন। টিভির পর্দাতেও তাঁরা চোখ রেখেছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতাল নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য না করাতে শহরবাসী হতাশ।

গোবরডাঙা পৌর উন্নয়ন পরিষদ দীর্ঘ দিন ধরেই গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গ ভাবে চালুর দাবিতে আন্দোলন করছে। সংগঠনের সহ সভাপতি পবিত্র মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা আশা করেছিলাম, এ বার হয় তো মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতাল চালুর বিষয়ে সদর্থক কোনও বার্তা দেবেন। টিভির পর্দায় চোখ রেখেছিলাম। কিন্তু হতাশ হলাম। বহু মানুষ ফোন করে আমাদের কাছে সে কথা জানাচ্ছেন।’’

Advertisement

২০১৭ সালের মে মাসে ব্যারাকপুরের প্রশাসনিক সভায় পুরপ্রধান সুভাষ দত্ত মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এলাকার বেহাল হাসপাতালের বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। পুরপ্রধানের প্রশ্ন ছিল, হাসপাতাল নিয়ে তিনি এলাকার মানুষকে কী জানাবেন? মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছিলেন, বলে দেবেন, হাসপাতাল হবে না। মুখ্যমন্ত্রীর সে দিনের কথা বলার ধরন নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করেন সাধারণ মানুষ। তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরাও দলীয় পতাকা ছাড়া সামিল হয়েছিলেন সেই আন্দোলনে। গোবরডাঙা পৌর উন্নয়ন পরিষদ ও হাসপাতাল বাঁচাও কমিটির ডাকে এলাকায় বন‌্ধ পালন হয়। বন্‌ধ সফল হওয়ার পরেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের চাপে সুভাষকে পুরপ্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হয়। তিনি শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে সরে দাঁড়ান। পরবর্তী সময়ে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে সুভাষ তাঁর সঙ্গে দেখা করলে বরফ গলে। ফের পুরপ্রধান হিসাবে শপথ নেনে সুভাষ। কিন্তু হাসপাতালের সমস্যা এখনও মেটেনি।

শুক্রবার পুরপ্রধান মুখ্যমন্ত্রীর সভায় থাকলেও তিনি হাসপাতাল নিয়ে কোনও কথা তোলেননি। ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, নতুন করে আর বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে চান না। সুভাষ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এ দিন কোনও ঘোষণা না করলেও রাজ্য সরকার হাসপাতালটি নিয়ে প্রশাসনিক পদক্ষেপ শুরু করেছে।’’

গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালটির অন্তর্বিভাগটি ২০১৪ সালের ৪ নভেম্বর থেকে বন্ধ। অতীতে এখানে রোগী ভর্তির ব্যবস্থা ছিল। অস্ত্রোপচারও হত। গোবরডাঙা পুরসভা ও সংলগ্ন গ্রামীণ এলাকার পাঁচ লক্ষ মানুষ ওই হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু এখন পড়ে থেকে থেকে হাসপাতাল ভবনে যন্ত্রপাতি সব নষ্ট হতে বসেছে। বর্হিবিভাগে এখন একজন চিকিৎসক সপ্তাহে তিন-চার দিন রোগী দেখেন। তা-ও দিনের কয়েক ঘণ্টা মাত্র। মানুষের দাবি, নতুন করে পরিকাঠামোর তৈরির কোনও বিষয় নেই। তা হলে কেন হাসপাতালটি চালু হবে না?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন