প্রতীকী ছবি।
কড়া হচ্ছে লক ডাউন। বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যজুড়েই কন্টেনমেন্ট ও বাফার জোন নির্দিষ্ট করে সেখানে যান চালাচল, দোকান বাজার খোলা-সহ নানা বিষয়ে বিধিনিষেধ জারি করছে রাজ্য সরকার। দেশজুড়ে দীর্ঘ লকডাউনের পর এখন ‘আনলক’ পর্ব চলছে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে লকডাউন জারি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। তবে প্রশাসন সূত্রের খবর, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই এই সিদ্ধান্ত।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা জুড়েই গত কয়েকদিনে হু হু করে বেড়েছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত তিন দিনেই নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৩০০ জন। জেলার দুই স্বাস্থ্য জেলাতেই পরিস্থিতি ভয়াবহ।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা স্বাস্থ্য জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছুঁই ছুঁই। জেলার প্রতিটি ব্লকেই প্রায় রোজই নতুন আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। কখনও পুলিশ আধিকারিক, কখনও স্বাস্থ্যকর্মী আবার কখনও চিকিৎসকও আক্রান্ত হয়েছেন।
কী ভাবে হাতের বাইরে চলে গেল পরিস্থিতি? প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ এর জন্য দায়ী করছেন মানুষের সচেতনতার অভাবকেই। লকডাউন শিথিল হতেই বিধিনিষেধের তোয়াক্কা করছেন না বেশিরভাগ মানুষই। দোকানে বাজারে অপ্রয়োজনে ভিড় বাড়ছে। পাশাপাশি অফিস-কাছারি চালু হয়ে যাওয়ায় মানুষকে নিয়মিত বাইরে বেরোতে হচ্ছে। সেখানেও অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। এ দিকে বহু পরিযায়ী শ্রমিক গত কয়েকদিনে এলাকায় ফিরেছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বহু ক্ষেত্রে তাঁদের থেকেও সংক্রমণ ছড়িয়েছে।
এই অবস্থায় নতুন করে লকডাউনের জল্পনা শোনা যাচ্ছিল কয়েকদিন ধরেই। মঙ্গলবার নবান্ন থেকে কন্টেনমেন্ট জোনে লকডাউন কড়া করার কথা জানানো হয়। জেলা প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই ব্লক ও পুরসভা ভিত্তিক কন্টেনমেন্ট জোন ও বাফার জোনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, সেই তালিকায় কিছু পরিবর্তন নিয়েও আলোচনা চলছে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সেই সব জায়গাগুলিতে যাতে নিয়ম মানা হয় সে ব্যপারে পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা শাসক (ডেভলপমেন্ট) সাগর চক্রবর্তী বলেন, “করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই নিয়ে ইতিমধ্যে আমরা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে আলোচনা করেছি।”
এদিকে স্বাস্থ্য বিধি মানা নিয়ে পুলিশি নজরদারি শুরু হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। ইতিমধ্যেই জেলার বিভিন্ন জায়গায় মাস্ক না পরে রাস্তায় বেরোনো মানুষদের সতর্ক করেছে পুলিশ। এমনকী মাস্ক না পরে বাসে ওঠায়, পুলিশ নামিয়ে দিয়েছে, এমন ঘটনাও ঘটেছে। বৃহস্পতিবার থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে আরও কড়া নজরদারি চলবে বলেই পুলিশ প্রশাসন সূত্রে খবর।