চাকরি-বাকরি কবে হবে, প্রশ্ন 

এখানে সব প্রশ্নেই তর্ক-বিতর্ক জমে। মোহনবাগান না ইস্টবেঙ্গল? মেসি বড় না রোনাল্ডো? অমিতাভ না শাহরুখ? মমতা-মোদী তো আছেই। ভোটের দিন এগিয়ে আসছে। রাজনীতির সেই তর্কই আরও প্রবল হচ্ছে এখানে। ঠিকানা— চায়ের দোকান। আজ হাসনাবাদের গোপালের চায়ের দোকান। কান পাতলেন নির্মল বসুমহিষপুকুরের বাসিন্দা বছর বাহাত্তরের লালমোহন দাস অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। চায়ে চুমুক দিতে দিতে তিনিই আড্ডার সূচনা করলেন।

Advertisement
শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৯ ০৬:৪৫
Share:

চায়ের-কাপে-তুফান: রাজনৈতিক চাওয়া-পাওয়া নিয়ে মত বিনিময় এলাকাবাসীর। নিজস্ব চিত্র

শুরু হয়ে গিয়েছে ভোটপ্রচার। কেন্দ্রে-কেন্দ্রে বিভিন্ন দলের নেতানেত্রী, প্রার্থীদের সদা আনাগোনা। সকাল-সন্ধে পাড়ায়-পাড়ায় চায়ের দোকানে চলছে ভোটচর্চা। চলছে গত পাঁচ বছরে পাওয়া না-পাওয়ার তুল্যমূল্য হিসেব। হাসনাবাদের বাইলানি বাজারে গোপালের চায়ের দোকানে বসেছিল এ রকমই চা-আড্ডা।

Advertisement

মহিষপুকুরের বাসিন্দা বছর বাহাত্তরের লালমোহন দাস অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। চায়ে চুমুক দিতে দিতে তিনিই আড্ডার সূচনা করলেন। বললেন, ‘‘মোদীর আমলে পাকিস্তানকে কিন্তু বেশ জব্দ করা গিয়েছে। পাকিস্তানের ঘরে ঢুকে ভারত যে ভাবে আক্রমণ আনল, তা প্রশংসার দাবি রাখে। আন্তর্জাতিক স্তরেও এ জন্য ভারতের মর্যাদা বেড়েছে।’’ মাস্টার মশাইয়ের কথা শেষ হতে না হতেই পেশায় কৃষক অসীম মণ্ডল বলে উঠলেন, ‘‘সে তো বুঝলাম দাদা, কিন্তু এতে দেশের সাধারণ মানুষের কী উপকার হল? আমাদের জন্য কী হয়েছে? কৃষকদের জন্য কেন্দ্র সরকারের নানা প্রকল্পের কথা তো শুধু প্রধানমন্ত্রীর মুখেই শোনা যায়। আমাদের কাছে সেই সুবিধা পৌঁছচ্ছে কই?’’ এক নিঃশ্বাসে কথাগুলি বলে একটু থামলেন অসীম। চায়ে ভিজিয়ে নিলেন গলাটা। তারপরে বেশ তৃপ্তির সঙ্গে বলতে শুরু করলেন, ‘‘তবে এটা ঠিক যে, আমরা রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছি।’’

অসীমবাবুর পাশে বসা বছর পঞ্চাশের সঞ্জিত স্বর্ণকার এক রাশ ক্ষোভ নিয়ে বললেন, ‘‘চাষবাস করে কতই বা রোজগার করতে পারি! এর মধ্যে কষ্ট করে ছেলেটাকে এমএ পাস করিয়েছি। কিন্তু সে এখনও বেকার। চাকরির পরীক্ষা দিতে দিতে হয়রান হয়ে পড়েছে। কোনও রাজনৈতিক দলের নেতাই সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামের দরিদ্র পরিবারের কর্মসংস্থানের কথা ভাবে না।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এই কথা শুনে চায়ের গ্লাসটা নামিয়ে রাখতে রাখতে গাড়ি ব্যবসায়ী নদিয়া গ্রামের বছর মহম্মদ মেহতাব হোসেন বলেন, ‘‘পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়ছে বলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামও আকাশছোঁয়া হয়ে যাচ্ছে। আমাদের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়ছে। এ সব নিয়ে কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার কি আদৌ ভাবছে?’’

মেহতাবের কথার খেই ধরে কথা বলতে শুরু করলেন পেশায় ওষুধ ব্যবসায়ী শংকর বিশ্বাস। বলে উঠলেন, ‘‘আর যাই হোক, জিএসটি চালু করে অনেক অসাধু ব্যবসায়ীকে কিন্তু বাগে আনা গিয়েছে। এর ফলে তো আমার-আপনার মতো সাধারণ মানুষেরই উপকার হল। অবশ্য এটাও ঠিক যে, জিএসটি-র ফলে মধ্যবিত্ত মানুষের বেশ কিছুটা অসুবিধাও হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন