বন্ধ হোক বিভাজনের রাজনীতি

এখানে সব প্রশ্নেই তর্ক-বিতর্ক জমে। মোহনবাগান না ইস্টবেঙ্গল? মেসি বড় না রোনাল্ডো? অমিতাভ না শাহরুখ? মমতা-মোদী তো আছেই। ভোটের দিন এগিয়ে আসছে। রাজনীতির সেই তর্কই আরও প্রবল হচ্ছে এখানে। ঠিকানা— চায়ের দোকান। আজ বসিরহাটের বলাইয়ের চায়ের দোকান। কান পাতলেন নির্মল বসুতাঁর মুখের কথা শেষ হতে না হতেই আলোচনার মুখ ঘুরিয়ে দিলেন বসিরহাট আদালতের আইনজীবী অজয় বসু।

Advertisement
শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৯ ০৬:৪৯
Share:

চায়ের-কাপে-তুফান: রাজনৈতিক চাওয়া-পাওয়া নিয়ে মত বিনিময় এলাকাবাসীর। নিজস্ব চিত্র

বসিরহাট টাউনহল নতুন বাজার। বলাইয়ের চায়ের দোকান। সকাল থেকেই জমে উঠেছে আড্ডা। ভোট গোরগোড়ায়। তাই কথাবার্তার বেশির ভাগ জুড়েই ঘুরে ফিরে এল রাজনীতির কথা। কাপের পর কাপ চা উড়ল নিমেষে। আলোচনায় কখনও উঠে এল স্থানীয় সমস্যার কথা। কখনও সর্বভারতীয় রাজনীতির নানা দিক।

Advertisement

মধুসূদন ঘোষ (প্রাক্তন ব্যাঙ্ক কর্মী): ‘‘বসিরহাটে পরিস্রুত পানীয় জলের বড় অভাব। এ বিষয়ে দীর্ঘ বছর ধরে কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। ইছামতীর ও পাড়ে সংগ্রামপুর-শিবহাটি পঞ্চায়েত এলাকার জল তো আর্সেনিকের বিষে ভরা। বিভিন্ন গ্রামে ক্যানসারে কয়েকজনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে।’’ তবে নিজেই বললেন, ‘‘গত কয়েক মাস আগে বসিরহাট শহরে আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জলের প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় মানুষ কিছুটা হলেও আশার আলো দেখছেন।’’

তাঁর মুখের কথা শেষ হতে না হতেই আলোচনার মুখ ঘুরিয়ে দিলেন বসিরহাট আদালতের আইনজীবী অজয় বসু। বললেন, ‘‘মানুষের কল্যাণে বিভাজনের রাজনীতি অবিলম্বে বন্ধ হওয়া জরুরি। নয় তো দেশের বড় রকম ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। যে ভাবে সর্বত্র বিভাজনের রাজনীতি শুরু হয়েছে, তাতে মানুষের উপরে মানুষের বিশ্বাস কমছে। নেতানেত্রীদের আরও সচেতন হতে হবে। না হলে শহর-গ্রামে বড় রকম বিপদের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।’’ সায় দিলেন অনেকেই। পাশ থেকে প্রাক্তন পুলিশকর্মী সুখময় দে বলে উঠলেন, ‘‘শিক্ষা ব্যবস্থায় সুষ্ঠু পরিচালনার অভাবে আখেরে ছাত্রছাত্রীদের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। শিক্ষা প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের তেমন কোনও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

শ্যামল ভৌমিক পেশায় ব্যবসায়ী। বললেন,‘‘মানুষ ভোট ভোট করে লাফাচ্ছে। এ দিকে, বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়তে শুরু করেছে।’’ তা শুনে আর এক ব্যবসায়ী শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সীমান্ত শহর বসিরহাটে কোনও শিল্পই হল না। সুন্দরবনের শিক্ষিত বেকারদের কাজের খোঁজে আজও ভিনরাজ্যে পাড়ি দিতে হচ্ছে।’’ তিনি জুড়ে দিলেন স্থানীয় কিছু সমস্যার কথাও। বললেন, ‘‘লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে শহরের ফুটপাত হলেও মানুষের সেখান দিয়ে হাঁটাচলার উপায় নেই।’’ রতন ভট্টাচার্যের প্রশ্ন, ‘‘অনেক দলই বাইরে থেকে প্রার্থী আনছে। এটা কেন হবে? ভোট মিটলে ওঁরা কি এলাকার মানুষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলবে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন