লোকসভা ভোট মিটে গেলেও কাটছে না আতঙ্কের পরিবেশ
general-election-2019-west-bengal

পায়ে পায়ে ভয়

এ বার সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রামের বিজেপির সমর্থকদের উপরে লাগাতার হুমকি চলছিল বলে অভিযোগ ওঠে।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

মন্দিরবাজার শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৯ ০৫:২৫
Share:

আতঙ্ক: ভাটপাড়ার বহু এলাকায় সোমবার দোকান বন্ধ ছিল। রাস্তাঘাট সুনসান। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

এ বারও ভোট দিতে পারলেন মন্দিরবাজারের খেলারামপুর গ্রামের মোল্লাপাড়ার শ’দুয়েক ভোটার।

Advertisement

চার দিকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল, মাইক্রো অবজার্ভারদের ছোটাছুটি, ভোটারদের নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার ডাক— এত কিছুর পরেও মোল্লাপাড়ার অবস্থা যে কে সেই।

রবিবার, ভোটের দিন ঘরে সিঁটিয়ে ছিলেন এখানকার বহু পরিবার। বাড়ির কাছেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে সাহস করে পা বাড়াতে পারেননি এঁরা।

Advertisement

কিন্ত কেন?

মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মন্দিরবাজার ব্লকের কৃষ্ণপুর পঞ্চায়েতের খেলারামপুর গ্রামে ভোটার ১২৮০ জন। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৫৩ নম্বর বুথের বাইরে গত পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে বোমাবাজি হয়। শাসকদলের দুষ্কৃতীরা দাপিয়টে বেরিয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। বিরোধীরা অধিকিংশই সে বার বুছের ধারেকাষে ঘেঁষতে পারেননি বলে অভিযোগ। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফলাফলের নিরিখে ১২৮০ ভোটের মধ্যে ভোট পড়ে ১০৫৫টি। শাসক দলের প্রার্থী পেয়েছিলেন ৮৪৪টি ভোট। ওই নির্বাচনে সরাসির বিজেপি কোন প্রার্থী দিতে না পারলেও সমর্থিত নির্দল প্রার্থী ছিলেন।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এ বার সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রামের বিজেপির সমর্থকদের উপরে লাগাতার হুমকি চলছিল বলে অভিযোগ ওঠে। ভোটের আগে বেশ কয়েকজন বিজেপি সমর্থক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় যোগ দেওয়ার পরে বাড়িতে ফিরলে নানা ভাবে শাসানি দেওয়া হচ্ছিল বলেও অভিযোগ ওঠে। গ্রামের বিজেপি সমর্থকদের অভিযোগ, ভোটের আগের দিন, শনিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ জনা ২৫ দুষ্কৃতী বাড়ি বাড়ি এসে হুমকি দিয়ে যায়। বলে যায়, ভোটের দিন কাউকে যেন বুথের আশেপাশেও দেখা না যায়। সেই হুমকি ভুলে ভোটের দিন আর বুথমুখো হননি অনেকেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বিজেপি সমর্থক বললেন, ‘‘আমরা আতঙ্কে মধ্যে রয়েছি। পুলিশে জানালে ওরা বলে দিয়েছে, আরও ক্ষতি করবে। তাই প্রশাসনের দ্বারস্থ হতে পারছি না।’’

ওই এলাকার বাসিন্দা, বিজেপির জেলা সম্পাদক দিলীপ জাটুয়ার অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটে তাঁদের দলের কর্মীদের বুথের ধারেকাছে ঘেঁষতে দেয়নি। দিনের পর দিন ধরে মারধরের হুমকি চলছিল। এ বার লোকসভা ভোটের আগের দিনও শাসিয়ে যায় শাসকদল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। সমস্ত বিষয়টি পুলিশ-প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে তাঁর অভিযোগ।

এ বিষয়ে মন্দিরবাজারের তৃণমূলের বিধায়ক জয়দেব হালদারের দাবি, এ ধরনের কোনও অভিযোগ নজরে আসেনি। এ বার সম্পুর্ণ শান্তিতে ভোট হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে বিভিন্ন বুথে তাঁদের কর্মীরাই আক্রান্ত হয়েছেন বলে দাবি জয়দেবের।

নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিক জানান, তাঁদের কাছে এমন কোনও অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন