প্রশিক্ষণ: ক্যানিংয়ে। নিজস্ব চিত্র
প্রতিবন্ধীদের ভোটকেন্দ্রে পাঠানোর ব্যাপারে এ বার নানা উদ্যোগ করেছে নির্বাচন কমিশন। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকেও ভোটে সামিল করার ব্যাপারে সচেষ্ট হয়েছে কমিশন। উদ্দেশ্য একটাই, দেশের একজন ভোটারের ভোটও যেন এ বার নষ্ট না হয়।
তৃতীয় লিঙ্গের মানুষজনের প্রতি সমাজে অবহেলা, অবজ্ঞার ইতিহাস সুবিদিত। ট্র্যাফিক ক্রসিংয়ে দাঁড়িয়ে বা বাসে-ট্রেনে তালি বাজিয়ে টাকা তোলা, শিশুর জন্মের পরে ঢোল বাজিয়ে নাচ-গান করে রোজগারই তাঁদের জীবিকার মূল রাস্তা। কেউ কেউ যৌন ব্যবসাতেও নেমে পড়েন। সামাজিক স্বীকৃতির জন্য তাঁদের লড়াই দীর্ঘদিনের। এ বার নির্বাচন কমিশন বৃহন্নলাদের জন্য যে ব্যবস্থা করেছে, তাতে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত সকলে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সম্প্রতি ক্যানিং ২ বিডিও দেবব্রত পাল ও নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকেরা গোবিন্দনগর এলাকায় বৃহন্নলাদের পাড়ায় গিয়ে ইভিএম, ভিভিপ্যাট মেশিনের ব্যবহার হাতে-কলমে দেখিয়েছেন। যেহেতু কাজের সূত্রে বৃহন্নলারা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ান, তাঁরাও ভোটগ্রহণের মেশিন ব্যবহার নিয়ে সাধারণ মানুষকে বোঝাতে পারবেন বলে সরকারি কর্তাদের আশা। ভিভি প্যাট থাকলে মানুষ নিশ্চিত হবেন, তাঁদের পছন্দ মতো জায়গাতেই ভোট পড়েছে। এই পদ্ধতিতে ভোটের গোপণীয়তা নষ্ট হওয়াকও ব্যাপার নেই। এ সবই বিভিন্ন এলাকার মানুষজনকে বোঝাবেন বৃহন্নলারা।
বৃহন্নলা ভোটার ঝর্না বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা সারা দিন পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বেড়াই। সেখানে গিয়ে আমরা মানুষকে বোঝাবো, কী ভাবে ভোট দিতে হবে ভিভিপ্যাটে। আমরা অনেকেই ভোট দিতে যাই না, ভয় পাই। আগে ব্যালট পেপারে ছাপ দিয়ে ভোট দিয়েছি। এখন মেশিন অনেক উন্নত হয়েছে। আমরা ভোট দিচ্ছি এবং সকলকে ভোট দিতে
উৎসাহ দেব।’’
বিডিও বলেন, ‘‘আমাদের উদ্দেশ্য হল, সমাজের বিভিন্ন অংশের ভোটারদের সচেতন করা। আমরা মানুষের কাছে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছি। তাঁদের সচেতন করছি। এ বার বৃহন্নলাদের সচেতন করতে এই উদ্যোগ। শুধু তাই নয়, তাঁরাও যাতে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মানুষকে যন্ত্রের মাধ্যমে ভোটদানের বিষয়টি বোঝান, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।’’