ভোটের আগের দিনও গোলমাল 

বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংহকে নজরবন্দি করার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল। বিজেপিও পাল্টা তৃণমূল প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদীকে নজরে রাখার দাবি জানিয়েছে। সিপিএম আবার ভাটপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনের তৃণমূল প্রার্থী মদন মিত্রকে এলাকায় না ঢুকতে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৯ ০০:৪৭
Share:

—ফাইল চিত্র।

গত এক মাসের ঘটনাপ্রবাহ তেমন ইঙ্গিতই করছিল। ভোটের আগের দিনও রাজনৈতিক সংঘর্ষে অশান্ত রইল ব্যারাকপুর কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকা। সেই অভিযোগ সরাসরি পৌঁছল নির্বাচন কমিশনের পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবের কাছে।

Advertisement

বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংহকে নজরবন্দি করার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল। বিজেপিও পাল্টা তৃণমূল প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদীকে নজরে রাখার দাবি জানিয়েছে। সিপিএম আবার ভাটপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনের তৃণমূল প্রার্থী মদন মিত্রকে এলাকায় না ঢুকতে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে।

একই অভিযোগ জানিয়েছে বিজেপিও। বিভিন্ন জায়গায় দলীয় কর্মীদের মারধরের অভিযোগ জানিয়েছে সব পক্ষই। আগেই যদি এমন ঘটনা ঘটে, তা হলে ভোটের দিন কী হবে, তা নিয়ে আতঙ্কের প্রহর গুনছেন সাধারণ মানুষ। তাঁরা চাইছেন, নির্বাচন কমিশন যেন নির্বিঘ্নে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করে।

Advertisement

ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের ভোট বরাবরই ঘটনাবহুল। আগে লড়াইটা ছিল সিপিএমের সঙ্গে তৃণমূলের। ২০১১ সালের পর থেকে সিপিএমের সংগঠনে ধস চলছে। ফলে গত কয়েকটি ভোট কার্যত এক তরফা হয়েছে।

গত বিধানসভা, পঞ্চায়েত এবং নোয়াপাড়া কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে শাসক দলের বিরুদ্ধে কার্যত একতরফা ভোট করার অভিযোগ উঠেছে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির ছিল তৎকালীন তৃণমূল নেতা অর্জুন সিংহের দিকে।

সেই অর্জুন এ বার বিজেপির প্রার্থী। তাঁর এক দিনের সহকর্মীরাই আজ তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী। ফলে রণকৌশল থেকে শুরু করে অর্জুনের প্রায় প্রতিটি পদক্ষেপ তৃণমূলের চেনা। ফলে গত এক মাস ধরে দু’পক্ষের মধ্যে রোজই গোলমাল-সংঘর্ষ বেধেছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী আসার পরেও সেই গোলমালের ধারাবাহিকতা বন্ধ করা গেল না।

তৃণমূলের অভিযোগ, শনিবার রাতে ব্যারাকপুর পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শুভ্রকান্তি দাসকে বাড়ি থেকে ডেকে মারধর করে বিজেপির কর্মীরা। তৃণমূলও পাল্টা তাঁদের মারধর করে। এই ঘটনায় টিটাগড় থানার পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে।

এ দিন রতেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে পলতার কালিয়ানিবাসে। তৃণমূলের অভিযোগ, মোহিত বিশ্বাস নামে তাঁদের এক দলীয় কর্মী এলাকায় ঝান্ডা লাগাচ্ছিল। সেই সময় বিজেপির লোকেরা তাঁকে মারধর করে। বিজেপি অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

বিজেপির অভিযোগ, শনিবার রাতে হালিশহরে তাঁদের পাঁচ কর্মীর বাড়িতে হামলা করে তৃণমূল। ওই কর্মীদের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় তারা। দলীয় কর্মীদের ভোট দিতে না যাওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পরেই বিজেপির লোকেরা তৃণমূলের একটি পার্টি অফিসে হামলা চালায়। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি-ই প্রথমে তাঁদের পার্টি অফিসে আগে হামলা চালিয়েছে।

রবিবার দুপুরে অর্জুনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে তাদের এক দলীয় কর্মীকে মারধরের অভিযোগ করে তৃণমূল।ঘটনাটি ঘটে ব্যারাকপুরের মোহনপুর লকগেটে। নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, “বিজেপির প্রার্থী কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে আমাদের পার্টি অফিসে ঢুকে পঙ্কজ নামে এক কর্মীকে মারধর করেছেন। বাহিনীর জওয়ানদের দেখিয়ে তিনি ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করছেন।” বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছে তৃণমূল।

অর্জুনের পাল্টা অভিযোগ, তৃণমূলের লোকেরা তাঁদের দলীয় পতাকা খুলে ফেলছিল। তিনি বলেন, “পুলিশ সেগুলিকে তাদের গাড়িতে তুলছিল। আমি গিয়ে তার প্রতিবাদ করি। পাশেই তৃণমূলের পার্টি অফিস রয়েছে। সেখানে একজন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘুরছিল। আমরা তাড়া করে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিই। কিন্তু ওদের দলেরই একজন আগ্নেয়াস্ত্রটি নিয়ে পালিয়ে যায়।” সিপিএম প্রার্থী গার্গী চট্টোপাধ্যায় তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁদের ভোটারদের ভয় দেখানোর অভিযোগ করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন