বাসন্তী হাইওয়ে

মিনাখাঁ থেকে পাকড়াও লরির চালক ও মালিক

ভাঙড়ের ঘাতক লরির চালক ও মালিককে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার ভোরে মিনাখাঁর শিবপুর থেকে লরির চালক রবিউল চৌধুরী, ভাঙড়ের বোদরা থেকে মালিক বিমল সরকারকে ধরা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে খুন, বেপরোয়া গাড়ি চালানো-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ঘটনার সময়ে বিমলও লরিতে ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০২:৫৯
Share:

রবিউল চৌধুরী। — নিজস্ব চিত্র।

ভাঙড়ের ঘাতক লরির চালক ও মালিককে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার ভোরে মিনাখাঁর শিবপুর থেকে লরির চালক রবিউল চৌধুরী, ভাঙড়ের বোদরা থেকে মালিক বিমল সরকারকে ধরা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে খুন, বেপরোয়া গাড়ি চালানো-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ঘটনার সময়ে বিমলও লরিতে ছিলেন।

Advertisement

শনিবার রাতে ভাঙড়ের পাগলাহাটের কাছে ১২ চাকার ওই লরিটি দ্রুত গতিতে ছুটে এসে পরপর চারটি দোকানে ধাক্কা মারে। চাকার তলায় পড়ে মারা যান ৫ জন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় চপ বিক্রেতা আহেদ আলি মোল্লা, সব্জিবিক্রেতা দুলাল মণ্ডল, ফুলবিক্রেতা নিরঞ্জন ঘোষ, কাপড় বিক্রেতা সাকেদ মোল্লা ও আঠার দোকানদার আব্দুস শেখ-এর। গুরুতর জখম হন পাগলাহাট বাজারের চা বিক্রেতা দিলীপ ঘোষ, সব্জিবিক্রেতা সত্য মণ্ডল এবং ভগবতী মণ্ডল। আহতদের কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, বিমল লরি নিয়ে পাথর আনতে যাচ্ছিলেন। তাঁর দাবি, চালক রবিউল মত্ত অবস্থায় থাকায় দু’জনের মধ্যে ঝামেলা হয়। পাথর আনার পরিকল্পনা বাতিল করে ভোজেরহাটের বৈরামপুর থেকে গাড়ি ঘুরিয়ে তাঁরা ঘটকপুকুরের দিকে আসতে থাকেন। পাগলাহাট সেতু পার হওয়ার পরেই লরিটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। রাস্তার ধারে পরপর চারটি দোকানে ধাক্কা মেরে ৮ জনকে পিষে দেওয়ার পরে পালাতে চেষ্টা করে সেটি। ইতিমধ্যে লরির নম্বর নিয়ে স্থানীয় লোকজন থানায় খবর দিলে পুলিশের টহলরত গাড়ি লরিটিকে ধাওয়া করে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, পুলিশের গাড়ি তাড়া করে আসছে দেখে রবিউল সেটিকেও রাস্তার ধারে চেপে দিয়ে পালাতে চায়। শেষ পর্ষন্ত সাঁইহাটির কাছে লরিটিকে ফেলে রেখে পালিয়ে যান রবিউল ও বিমল। রাতেই পুলিশ লরিটিকে রাতেই আটক করে।প্রত্যক্ষদর্শী পিন্টু মোল্লা বলেন, ‘‘হঠাৎ দেখি একটা লরি হুড়মুড়িয়ে রাস্তার ধারের চারটি দোকানে ঢুকে পড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে পিছন ফিরে দেখি পাঁচ জন পড়ে রয়েছেন, রক্তে ভেসে যাচ্ছে রাস্তা। তিন জন আর্তনাদ করছিলেন। তড়িঘড়ি তাঁদের কলকাতায় পাঠানোর ব্যবস্থা করতে থাকি।’’

স্থানীয় বাসিন্দা সুজিত মণ্ডলের অভিযোগ, এমনিতেই বাসন্তী হাইওয়ে জুড়ে অনেকগুলো বাঁক। তার উপরে যে গতিতে গাড়ি চলাচল করে, তাতে দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। তা ছাড়া, রাস্তায় কোনও আলোর ব্যবস্থাও নেই। লেদার কমপ্লেক্স পর্যন্ত রাস্তার ধারে আলো থাকলেও প্রায়ই তা জ্বলে না। এমনকী অধিকাংশ স্তম্ভ থেকে বাতি চুরিও হয়ে গিয়েছে। দুর্ঘটনায় মৃতদের ময়না-তদন্তের পরে রবিবার দুপুরে পাঁচ জনের দেহ তাঁদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। নিরঞ্জন ঘোষের ছেলে সুরজিৎ এ বারই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে।

তাঁর ভাইপো বাবু সোনা ঘোষ বলেন, ‘‘ওদের খুব অভাবের সংসার। জমি-জমা বলতে কিছু নেই। জেঠু ফুলের ব্যবসা করে অনেক কষ্টে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা চালাচ্ছিলেন।’’ মৃত দুলাল মণ্ডলের ছেলে পার্থ মণ্ডলও বলেন, ‘‘বাবার রোজগারেই সংসার চলত।’’ দোষীদের ফাঁসির দাবিও তুলেছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন