এই সেতুই উদ্বোধনের অপেক্ষায়। ছবি: নির্মল বসু
বাদুড়িয়ায় সেতু
অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি নিয়ে জমি জটে চালু হচ্ছে না বাদুড়িয়া সেতু। বারাসতের প্রশাসনিক বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন পুরপ্রধান তুষার সিংহ। সেই জমি জট কাটেনি এখনও। চালু করা যায়নি সেতু। তবে তুষারের দাবি, জট কিছুটা কেটেছে। খুব শীঘ্রই সমাধান সূত্র মিলবে বলে আশা।
ক্ষুদ্রশিল্প তালুক
ব্যারাকপুরের প্রশাসনিক বৈঠক অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক ধীমান রায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করে বলেছিলেন, এলাকায় ক্ষুদ্র শিল্পের সঙ্গে হাজার দেড়েক মানুষ জড়িত। কিন্তু নানা কারণে শিল্পগুলি এখন মৃতপ্রায়। তাদের বাঁচাতে হাব তৈরি করা দরকার। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, অশোকনগরে আরআর দফতরের (রিফিউজি রিহ্যাবিলেশন ডিপার্টমেন্ট) যে জমি আছে, তাতে একটি স্মল ইন্ডাস্ট্রি হাব বা ক্ষুদ্র শিল্পতালুক গড়ে দেবেন।
ওই হাবের জন্য জমি চিহ্নিতকরণ হয়ে গিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার ৯ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডর মাঝে উদ্বাস্তু ও পুনর্বাসন দফতরের জমিতে প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। বিধায়ক ধীমান রায় বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট জমিতে পাঁচিল দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই জমিটি উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতর থেকে ক্ষুদ্র শিল্প দফতরের কাছে হস্তান্তর হয়ে যাবে। কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে।’’ বিরোধীদের অবশ্য দাবি, প্রকল্প শুধু ঘোষণার স্তরেই থেকে গিয়েছে। প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সত্যসেবী কর বলেন, ‘‘ক্ষুদ্র শিল্পতালুক বাস্তবে কিছুই হয়নি।’’ বাসিন্দারা জানালেন, পাঁচিল ঘেরা জায়গায় বাইরে থেকে লোকজন এসে নেশার আসর বসায়।
অশোকনগরে বহু মানুষ বাড়িতে ছোট কারখানা করে শাঁখা, শঙ্খ, টোপর তৈরি করেন। কেউ গয়নার বাক্স বানান। চিরুনি তৈরিতেও যুক্ত অনেকে।
গ্যালারির কাজ
বনগাঁ স্টেডিয়ামে একটি পূর্ণাঙ্গ আধুনিক গ্যালারি তৈরির কাজ চলছে। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের সাংসদ তহবিলের ৫০ লক্ষ টাকা ও পুরসভার ৭৫ লক্ষ টাকায় গ্যালারি তৈরি করছে পুরসভা। বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘কাজ শেষ পর্যায়ে।’’ গত বছর বারাসতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকে তাঁর কাছে বিষয়টি তুলেছিলেন পুরপ্রধান। মুখ্যমন্ত্রী জেলাশাসক অন্তরা আচার্যকে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেন।
অশোকনগরে দমকলকেন্দ্র
গত বছর ২৭ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারাসতে প্রশাসনিক সভা থেকে অশোকনগরে দমকল কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছিলেন। যদিও বহু দিন পরিষেবা চালু করা যায়নি। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি স্থানীয় হরিপুরে তৈরি হওয়া ওই দমকল স্টেশন থেকে পরিষেবা চালু হয়েছে।
বন্ধ হয়েছে গরু পাচার
বারাসতের প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী জেলার সীমান্ত এলাকা দিয়ে গরু পাচার বন্ধ করতে কড়া বার্তা দেন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের। নড়ে বসে পুলিশ-প্রশাসন। বনগাঁ ও বসিরহাট সীমান্ত দিয়ে গরু পাচার এখন কার্যত বন্ধ। মাঝে মধ্যে চোরাগোপ্তা কয়েক গাড়ি গরু অবশ্য যায়। যদিও অতীতের তুলনায় তা প্রায় কিছুই নয় বলেই মনে করেন স্থানীয় মানুষজন। বছরখানেক আগেও প্রকাশ্য গাড়ি করে গরু সীমান্তের দিকে নিয়ে যেত পাচারকারীরা। চাষের জমির উপর দিয়ে গরু নিয়ে যাওয়ার ফলে ফসল নষ্ট হত। প্রতিবাদ করে পাচারকারীদের হাতে নানা সময়ে প্রহৃত হন বহু মানুষ। পাচারকারীদের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা ঢুকেও এ পাড়ে সন্ত্রাস চালাত। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে পুলিশ লাগাতার পাচারকারীদের গ্রেফতার করেছে। আটক করেছে গরু। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এখন অনেকটা শুধরেছে বলে জানিয়েছেন সীমান্ত এলাকার মানুষজন।
বসিরহাটে মিষ্টি হাব
বসিরহাটের মিষ্টির নামডাক গোটা দেশে। সেখানে কোনও মিষ্টি হাব তৈরি করা যায় কিনা, বারাসতের বৈঠকে এসে সে কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তা নিয়ে পরে অবশ্য কোনও উচ্চবাচ্য শোনা যায়নি জল প্রকল্প।
গাইঘাটা: নৈহাটি থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে গঙ্গার জল হাবড়া ও গাইঘাটা নিয়ে আসার কাজ চলছে। ওই জল দেগঙ্গার চাকলা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে বলে গত বছর বারাসতে প্রশাসনিক বৈঠকে ঘোষণা করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়েছিলেন, ৬০০ কোটির টাকার ওই প্রকল্পের কাজ ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে শেষ হবে। বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক সুরজিৎ বিশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, কাজ খুব ধীরে চলছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এখনও কাজে গতি আসেনি। সুরজিৎ বলেন, ‘‘লাইন অশোকনগর পর্যন্ত চলে এসেছে। গাইঘাটার জলেশ্বরে রিজার্ভার তৈরি হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শেষ হবে।’’ চাকলা পর্যন্ত জলের লাইন বসলেও পরিষেবার কাজ শুরু হয়নি।
বনগাঁয় সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাস
বনগাঁ শহরের গাঁধীপল্লি এলাকায় জোর কদমে চলছে সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাস তৈরির কাজ। দায়িত্বে বনগাঁ পুরসভা। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘২০১৯ সালের মধ্যে কাজ শেষ হবে।’’
হাবড়ায় টেক্সটাইল হাব
হাবড়ার বাণীপুরে টেক্সটাইল হাব হবে বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্থানীয় কুটিরশিল্পের উন্নতি হবে বলে আশা তৈরি হয় স্থানীয় মানুষের মধ্যে। এখানে প্রচুর জামা-কাপড় তৈরির কারখানা আছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, শিক্ষা দফতরের প্রায় ২৫ কাঠা জমিতে টেক্সটাইল হাব তৈরির কাজ চলছে। এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, প্রস্তাবিত জমির মাটি খুঁড়ে ভিত তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।