স্ত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা, ধৃত স্বামী

বুধবার সকালে অশোকনগর থানার গুমা নবপল্লি এলাকার ঘটনা। মৌসুমির বাবা রবীন্দ্রনাথ ব্যাপারির অভিযোগ, স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

অশোকনগর শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৯ ০১:৫৭
Share:

মৌসুমি ব্যাপারি

স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ছিল স্বামীর বিরুদ্ধে। সে নাকি স্ত্রীকে বলেছিল, ‘‘যেখানে পারিস গিয়ে মর।’’ বাধ্য হয়ে বাপের বাড়িতে ফিরে যান স্ত্রী। সেখানেই সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল মৌসুমি ব্যাপারি (২৯) নামে ওই মহিলার।

Advertisement

বুধবার সকালে অশোকনগর থানার গুমা নবপল্লি এলাকার ঘটনা। মৌসুমির বাবা রবীন্দ্রনাথ ব্যাপারির অভিযোগ, স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। থানায় তিনি মেয়ের স্বামী নৃপেন হাজরার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুলিশ মঙ্গলবার বিকেলে নৃপেনকে গ্রেফতার করে। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা রুজু করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বারাসত জেলা হাসপাতালে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ছয়েক আগে মৌসুমির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল এজি কলোনির বাসিন্দা নৃপেনের। অভিযোগ, বিয়ের কয়েক মাস পর থেকে সাংসারিক নানা কারণে নৃপেন স্ত্রীর উপরে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন শুরু করে। মৌসুমী মারধরের ঘটনা বাপের বাড়িতে জানান। রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘আমরা কয়েকবার নৃপেনকে গিয়ে অনুরোধ করি, সে যেন মৌসুমির গায়ে হাত না তোলে। কয়েক দিন সব ঠিকঠাক থাকত। ফের শুরু হত অত্যাচার।’’ অশোকনগর থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে এক সময়ে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মৌসুমি। বাপের বাড়িতে চলে আসেন। সে সময়ে নৃপেন নিজের ভুল স্বীকার করে স্ত্রীকে ফের নিজের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। কয়েক মাস সব ঠিকঠাকই চলছিল। অভিযোগ, ফের নৃপেন স্ত্রীকে মারধর শুরু করে। তাদের দু’টি শিশুপুত্র রয়েছে। কয়েক দিন আগে ছেলেদের শ্বশুরবাড়িতে রেখে মৌসুমি বাপের বাড়ি চলে যান।

Advertisement

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মৌসুমি শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন ছেলেদের সঙ্গে করে নিয়ে আসতে। অভিযোগ, নৃপেন মারধর করে স্ত্রীকে তাড়িয়ে দেয়। তাঁকে মরতে বলে।

বাপের বাড়িতে ফিরে রাতে খাওয়া-দাওয়া করেননি ওই তরুণী। মনমরা হয়েছিলেন। বুধবার সকালে ঘুম থেকে উঠে রবীন্দ্রনাথ দেখেন, মেয়ে ঘরে নেই। পাশের ঘরে গিয়ে দেখেন, মেয়ের দেহ পাখার সঙ্গে ঝুলছেন। অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৌসুমিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘নৃপেনের আগে একবার বিয়ে হয়েছিল। সেটা আমাদের কাছে গোপন করে গিয়েছিল। তা ছাড়া, নেশা করে বাড়ি ফিরত। মেয়ে আপত্তি জানালে শুরু হত মারধর।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন