ছেলের সামনে বাবার উপরে হামলা বাঘের

মন্টুর বাড়ি সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লকের ন্যাজাট থানার দক্ষিণ আখনাতলা গ্রামের খাদিপাড়ায়। বুধবার সকালে দেহ গ্রামে আনলে কান্নায় ভেঙে পড়েন আত্মীয়-পরিজনেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৪৭
Share:

স্মৃতি: এই নৌকোতেই মাছ ধরতে গিয়েছিলেন মন্টুবাবু। নিজস্ব চিত্র

মাছ ধরা শেষ। এ বার জাল গুটিয়ে নৌকা করে বাড়ি ফেরার পালা। এমন সময়ে হঠাৎ জোরে শব্দ।

Advertisement

সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে ঝড়ের গতিতে বেরিয়ে এল একটি বাঘ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই এক মৎস্যজীবীর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কান, গলা মাথায় একের পর এক থাবা মারতে থাকে। কামড়ে জঙ্গলের মধ্যে টেনে নিয়ে যেতে চায়।

আপ্রাণ চেষ্টা করছেন বাবা, সেই দৃশ্য সামনে থেকে দেখেছেন ছেলে নারায়ণ সর্দার। কিন্তু বাজি ফাটিয়ে, টিন বাজিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। যখন বাঘে মানুষে লড়াই শেষ হল, তখন নিস্তেজ হয়ে পড়েছেন মন্টু সর্দার (৪০)।

Advertisement

মন্টুর বাড়ি সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লকের ন্যাজাট থানার দক্ষিণ আখনাতলা গ্রামের খাদিপাড়ায়। বুধবার সকালে দেহ গ্রামে আনলে কান্নায় ভেঙে পড়েন আত্মীয়-পরিজনেরা। মাছ ধরতে যাওয়া নিয়ে চিন্তায় সকলে। মাছের জাল-সহ মন্টুর সাধের নৌকোটি নদীর একধারে এখনও ভাসছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে নারায়ণ-সহ গ্রামের কয়েকজনকে নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের সজনেখালি পঞ্চমুখী নদীতে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন মন্টু। সোমবার সকালে একটা বড় বাঘ তাঁদের সামনে এসে পড়ে। মন্টুকে আক্রমণ করে।

অনেক চেষ্টার পর বাঘটি জঙ্গলের ভিতরে পালায়। তবে ততক্ষণে মন্টু মারাত্মক জখম হয়েছেন। ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছে শরীর। সকলের চোখের সামনেই ছটফট করে মারা যান মন্টু। এ দিন দেহ ময়না-তদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়।

মন্টুর দেহ নৌকোয় করে সন্দেশখালির ন্যাজাট ফেরিঘাটে আনা হয়। মন্টুবাবুর সঙ্গে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন গোপাল মণ্ডল, নিরাপদ কর্মকাররা। তাঁদের কথায়, ‘‘ভাল মাছ ওঠায় বেশ খুশি ছিলাম সকলে। হঠাৎ সব মাটি হয়ে গেল। এত দিন ধরে জঙ্গলে যাচ্ছি। এমন দৃশ্য এখনও দেখিনি।’’

নারায়ণ বলেন, ‘‘চেষ্টা করেছিলাম বাবাকে বাঘের মুখ থেকে ফিরিয়ে আনার। একটা সময় বাঘ বাবাকে ছেড়ে পালিয়েও গেল। কিন্তু শেষমেশ ঘরে আনলাম বাবার দেহ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন