সেতুর জন্য আয় হারিয়ে সঙ্কটে ভেসেলকর্মী ও মাঝিরা

১৯৯৭ সাল থেকে হাতানিয়া দোয়ানিয়ায় ভেসেলে গাড়ি পারাপার শুরু হয়। কাজ হত ব্যক্তিগত এজেন্সির মাধ্যমে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৯ ০৭:৩১
Share:

১৯৯৭ সাল থেকে হাতানিয়া দোয়ানিয়ায় ভেসেলে গাড়ি পারাপার শুরু হয়। কাজ হত ব্যক্তিগত এজেন্সির মাধ্যমে। ছবি: সংগৃহীত।

হাতানিয়া দোয়ানিয়া নদীর উপরে সেতু নির্মাণ হওয়ায় কাজ হারাতে বসেছেন প্রায় জনা সত্তর ভেসেলকর্মী ও মাঝি। বিপন্ন হতে চলেছেন ওই ঘাট-এলাকা এবং সন্নিহিত অঞ্চলের খুচরো ব্যবসায়ীরাও।

Advertisement

নতুন সেতু জুড়ে দিয়েছে নারায়ণপুর ও নামখানা। পূর্ত ও সড়ক বিভাগের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস সেতুটি উদ্বোধন‌ও করেছেন। তবে সেতু এখনও চালু হয়নি। প্রায় আধ কিলোমিটার চওড়া ওই নদীপথে বহু বছর ধরেই ভেসেলে গাড়ি পারাপার চলে। নামখানা ব্লকের মানুষ নামখানা থেকে নারায়ণপুর আসতে ওই নদীপথই ব্যবহার করেন। ভেসেলে গাড়ি পারাপারের জন্য কর্মী রয়েছেন ২৬ জন। সাধারণ মানুষকে পারাপারের জন্য যন্ত্রচালিত নৌকা চালানোর কাজে মাঝি রয়েছেন প্রায় ৫০ জন। সেতু খুলে গেলে জীবিকার ক্ষেত্রে সঙ্কটে পড়বেন তাঁরা।

১৯৯৭ সাল থেকে হাতানিয়া দোয়ানিয়ায় ভেসেলে গাড়ি পারাপার শুরু হয়। কাজ হত ব্যক্তিগত এজেন্সির মাধ্যমে। ২০১৩ সালে মার্চ মাস থেকে ভূতল পরিবহণ দফতর তা অধিগ্রহণ করে। সে সময় থেকেই ঠিকাদারের অধীনে ২৬ জন শ্রমিক ও পরিবহণ দফতরের কর্মীরা মিলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভেসেলে কাজ করেন। নামখানা ব্লকেই বকখালি পর্যটন কেন্দ্র। শীতের মরসুমে পর্যটকেরা গাড়ি নিয়ে নারায়ণপুর ঘাটে এসে ভেসেলে চাপতেন। তার পরে পৌঁছতেন বকখালিতে।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কিন্তু এ বারে আর কেউ গাড়ি নিয়ে ভেসেলের ঘাটে যাবেন না। সেতু চালু হলে সড়কপথেই সরাসরি পৌঁছে যাওয়া যাবে বকখালি। সাধারণ মানুষও এ বার থেকে সড়কপথে সেতু পার হয়ে বকখালি-কলকাতা সরাসরি যাতায়াত করবেন। শুধু তাই নয়। নারায়ণপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ঘাট পর্যন্ত শতাধিক দোকান রয়েছে। নারায়ণপুর ঘাট ব্যবহার বন্ধ হলে ওই সব ব্যবসায়ীর মাথায় হাত। একই দুরবস্থা ঘাট থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের।

ওই ঘাটের কর্মী অসিতবরণ দলপতি, প্রকাশ মণ্ডলেরা জানান, বহু বছর ধরে তাঁরা মানুষকে পরিষেবা দিয়ে আসছেন। অথচ তাঁদের আজও কোনও স্থায়ী ব্যবস্থা হল না। ভেসেল ঘাটের ইন-চার্জ উজ্জ্বল মিত্র বলেন, ‘‘সেতু চালু হলে ভেসেল পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাবে। বৃহত্তম স্বার্থে সেটা মেনে নিতেই হবে। কিন্তু এত জন কাজ হারালে তাঁদের কী হবে? বিষয়টি সমস্ত দফতরে জানিয়েছি। চাইব, সকলের স্থায়ী কাজের ব্যবস্থা হোক।’’

একই দাবি করেছেন যন্ত্রচালিত নৌকা শ্রমিকরাও। এ বিষয়ে স্থানীয় বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের প্রতিমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা বলেন, ‘‘ভেসেলকর্মীদের বিষয়ে আমি দফতরে কথা বলব। বিষয়টি সংবেদনশীল। মাঝিরাও আমার কাছে এসেছিলেন। আমি ওঁদের পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে দেখা করতে বলেছি। আর ব্যবসায়ীদের বিষয়ে জানাই, নামখানা ও নারায়ণপুর দু’দিকে দু’টি মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি করে ওঁদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে। সে জন্য ৯ কোটি টাকা বরাদ্দও হয়েছে। ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে, পাকা বাজার নির্মাণের জন্য জমি জোগাড় করে দিতে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement