সময়ে ডায়ালিসিস হয়নি, অপেক্ষাতেই মৃত্যু যুবকের

আলপথে হাঁটার সময়ে চন্দ্রবোড়া সাপের ছোবল পড়েছিল পায়ে। তড়িঘড়ি ক্যানিং হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসাও শুরু হয়েছিল। তবে, রক্তে ক্রিয়েটিনিনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় প্রয়োজন ছিল ডায়ালিসিসের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৩৫
Share:

তখনও বেঁচে লব। —নিজস্ব চিত্র।

আলপথে হাঁটার সময়ে চন্দ্রবোড়া সাপের ছোবল পড়েছিল পায়ে। তড়িঘড়ি ক্যানিং হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসাও শুরু হয়েছিল। তবে, রক্তে ক্রিয়েটিনিনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় প্রয়োজন ছিল ডায়ালিসিসের। তাই, বছর সাতাশের লবকুমার মণ্ডলকে ‘রেফার’ করে দেওয়া হয়েছিল কলকাতার চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

Advertisement

ওই যুবকের পরিবার মনে করছে, ‘সেটাই কাল হয়েছিল!’! কলকাতার ওই সরকারি হাসপাতালে তাঁকে পাক্কা দু’দিন ফেলে রাখলেও ডায়ালিসিস আর হয়নি। আর তার ফলে, দু’দিন ছটফট করার পরে, বুধবার রাতে মারা গিয়েছেন লব। বারুইপুরের গোপালপুর গ্রামের লবকুমারের পরিবারের ‘চিকিৎসার গাফিলতির’ অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যভবনে অভিযোগ দায়ের করেছে। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে ক্যানিংয়ের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও।

পারিবারিক আক্ষেপ বা স্থানীয় সংগঠনের দাবি-দাওয়া নয়, মধ্য-কুড়ির তরতাজা ওই যুবকের মারা যাওয়ার কোনও কারণই খুঁজে পাচ্ছেন না ক্যানিং হাসপাতালের এক বিশিষ্ট চিকিৎসকও। কেন? ওই চিকিৎসক বলছেন, ‘‘২৬ মার্চ রাতে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে পর্যাপ্ত এভিএস দেওয়া হয়েছিল। সেরেও উঠছিলেন। তবে চন্দ্রবোড়া ছোবল দিলে অনেক সময়ে ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যায়। সামান্য ডায়ালিসিস করলে তা সেরেও যায়।’’ চিকিৎসার সেই সুযোগটুকুই মেলেনি ওই যুবকের। লবের এক আত্মীয় বলছেন, ‘‘আমরা বার বার জিজ্ঞেস করেছি, উত্তর পেয়েছি, ‘অপেক্ষা কর, ঠিক সময়ে ডায়ালিসিস হবে।’’ ক্যানিংয়ের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষে সর্প বিশেষজ্ঞ বিজন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, পরিমাণ মতোই এভিএস দেওয়া হয়েছিল ওই যুবককে। সময়মতো চিকিৎসা শুরু হওয়ায় তাঁর মৃত্যু ভয়ও কেটে গিয়েছিল। বিজনের কথায়, ‘‘কলকাতার হাসপাতালে দু-দুটো দিন ডায়ালিসিসের অপেক্ষায় পড়ে না থাকলে কোনও সমস্যাই হত না ওই যুবকের।’’ বিশিষ্ট সর্প বিশারদ এম এস কুট্টিও জানান, চন্দ্রবোড়া সাপে কাটলে ক্রিয়েটিনিন সামান্য বেড়ে যায়। তবে, এক-দু’টো ডায়ালিসিসেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে ওঠে।

Advertisement

এ ক্ষেত্রে দু’দিন ফেলে রাখলেও তাঁকে ডায়ালিসিস দেওয়া গেল না কেন? চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক কর্তা জানিয়েছেন, অভিযোগ পেয়ে শুরু হয়েছেন কারণ খোঁজা। স্বাস্থভবন সূত্রেও জানানো হয়েছে, যথাযথ তদন্ত করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন