আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে তোলাবাজি করছিল এক দল দুষ্কৃতী। সঙ্গে গালিগালাজ এবং হুমকি। তবে শেষরক্ষা হল না। জনতার হাতে ধরা পড়ে গেল একজন। তাকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ওই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে তার সঙ্গীদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।
রবিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাট শহরের প্রাণকেন্দ্র, টাউনহল এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম তনয় মণ্ডল ওরফে ঘনশ্যাম। বাড়ি স্থানীয় জোড়াপুকুর ধারে। ঘনশ্যামের সঙ্গী দাসপাড়ার বাসিন্দা বুদ্ধদেব দাস ওরফে বুদ্ধর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এই ঘটনার পরে তনয় মণ্ডল এবং বুদ্ধদেব দাসের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ বুদ্ধ এবং তনয় মদ্যপ অবস্থায় টাউনহলের কাছে একটি মোবাইলের দোকানে গিয়ে ১০ হাজার টাকা চায় বলে অভিযোগ। দোকানদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাঁকে মারধর করা হয়। ফেলে দেওয়া হয় মোবাইল। পরে ওই দুই দুষ্কৃতী মাছ বাজারে গিয়ে এক মাছ বিক্রেতার মাথায় রিভলভার ধরে ৩ হাজার টাকা তোলা আদায় করে। এলাকার এক লটারি বিক্রেতার দোকানেও ঢোকে তারা। লটারি বিক্রেতা অসীম দাস ওরফে টেনার অভিযোগ, ‘‘মদ্যপ অবস্থায় রিভলভার উঁচিয়ে ওরা খুনের হুমকি দিয়ে আমার দোকানে ঢুকেছিল। বুদ্ধ এবং তনয় ৫ লক্ষ টাকা চায়। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করলে হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে ফিরে এসে বলে, টাকা না দিলে আমার মেয়েকে অপহরণ করবে।’’
ইতিমধ্যেই টাউনহল চত্বরে দুষ্কৃতীদের আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে তোলাবাজির কথা চাউর হয়ে যায়। লটারির দোকানের সামনে ভিড় বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে বুদ্ধ রিভলভার বের করে গুলি করার হুমকি দেয়। সে সময়ে ধস্তাধস্তিতে রিভলভারটি পড়ে যায়। সেটি তুলে এক রাউন্ড গুলি চালিয়ে বুদ্ধ পালিয়ে গেলেও ধরা পড়ে যায় তনয়। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে মারধর শুরু করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তনয়কে উদ্ধার করে থানায় আনে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরে বসিরহাট টাউনহল এলাকায় ইছামতী নদীর ধার ঘেঁষা পার্কে দুষ্কৃতীদের আনাগোনা বেড়েছে। দিনে-দুপুরে বসছে গাঁজা-মদ-মাদকের আসর। অল্পবয়সী কিশোর-কিশোরীরা পার্কে ঢুকলে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ছিনতাই করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ।
সোমবার নতুন বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সম্পাদক প্রদীপ কুণ্ডু বলেন, ‘‘উৎসবের মাসে ভিড়ে ঠাসা রাস্তায় দুষ্কৃতীরা প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তোলা চেয়ে মারধর, অপহরণ, খুনের হুমকি দিচ্ছে। ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা কোথায়?’’ অভিযুক্ত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা না হলে ব্যবসা বন্ধের হুমকি দিয়েছেন তাঁরা।
জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, বসিরহাট শহরে দুষ্কৃতী তাণ্ডবের অভিযোগ এসেছে। পুরো অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।