তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে ‘গুলি’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রবিবার বিকেল ৫টা নাগাদ তৃণমূল নেতা পরিতোষ হালদার কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে বেলতলি হাট থেকে ফিরছিলেন। অভিযোগ, তাঁদের পথ আটকে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় কিছু দুষ্কৃতী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোসাবা শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ০১:১৯
Share:

উদ্ধার: গোসাবায় অস্ত্রশস্ত্র। নিজস্ব চিত্র

বাইকে করে ফিরছিলেন তৃণমূল নেতা ও তাঁর অনুগামীরা। মাঝপথে বাইক আটকে তাঁকে লক্ষ করে গুলি ছুড়ে পালায় জনা কয়েক যুবক। গুলি অবশ্য গায়ে লাগেনি কারও। তবে এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রবিবার বিকেল ৫টা নাগাদ তৃণমূল নেতা পরিতোষ হালদার কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে বেলতলি হাট থেকে ফিরছিলেন। অভিযোগ, তাঁদের পথ আটকে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় কিছু দুষ্কৃতী। তারা শম্ভুনগর পঞ্চায়েতের প্রধান বরুণ প্রামাণিক ওরফে চিত্তর অনুগামী বলে অভিযোগ।

পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার রাতে ও সোমবার এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে। গুলি চালানোর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। গুলি চালানোর কথা অস্বীকার করেছেন চিত্ত। তিনি বলেন, “রবিবার বিকেল থেকে গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর ও পরিতোষের লোকজন আমার বাড়ি লুটের চেষ্টা করেছে। ওরাই বোম বন্দুক নিয়ে আমার উপরে হামলার ছক কষেছিল।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, পঞ্চায়েত পরিচালনায় তাকে নিয়মিত বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। চিত্তর অভিযোগ, পঞ্চায়েত সদস্য থেকে শুরু করে এলাকার সাধারণ মানুষকে হেনস্থা করছে জয়ন্তর লোকজন। পুলিশ-প্রশাসনও জয়ন্তর কথা মতো চলছে। তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে দল বিরোধী কাজের জন্য চিত্তকে দল থেকে বহিষ্কার করেন তৎকালীন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি শোভন চট্টোপাধ্যায়। সেই থেকেই কার্যত গোসাবার বিধায়ক জয়ন্তর সঙ্গে এই চিত্তর ঠান্ডা লড়াই চলছে বলে দলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। গত পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে দু’পক্ষের মধ্যে নতুন করে কোন্দল মাথা চাড়া দেয়। পঞ্চায়েত ভোটে জয়ন্তর মনোনীত তৃণমূল প্রার্থীদের বিরোধিতা করে শম্ভুনগর পঞ্চায়েতের সমস্ত আসনেই নির্দল প্রার্থী দিয়েছিলেন চিত্ত। শুধু প্রার্থী দেওয়াই নয়, তৃণমূলকে হারিয়ে এই পঞ্চায়েতের এগারোটি ও পঞ্চায়েত সমিতির তিনটি আসন নিজের দখলেও রেখেছিলেন। নির্দল হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও নিজেকে এখনও ‘তৃণমূল কর্মী’ বলেই দাবি করেন চিত্ত।

Advertisement

জয়ন্ত বলেন, “এলাকায় বোমা-বন্দুক নিয়ে সন্ত্রাস ও দল বিরোধী কাজের জন্য ওঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এখনও এলাকায় বহিরাগতদের নিয়ে বোমা-বন্দুক দিয়ে সন্ত্রাস করছেন। রবিবার সন্ধ্যায় শম্ভুনগর পঞ্চায়েতের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে চিত্তর লোকজনই।’’

জয়ন্ত নস্কর চিত্তকে বহিষ্কৃত তৃণমূল কর্মী বললেও চিত্ত তা মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, গত ২২ ফেব্রুয়ারি তাঁকে দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তীকে একাধিকবার ফোন করা হয়েছে। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএসেরও উত্তর দেননি।

তবে জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল বিতর্কে না গিয়ে বলেন, “উনি তিনি নিজেকে তৃণমূল কর্মী বলে পরিচয় দেন, তা হলে তিনি তৃণমূল কর্মী। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন